ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অস্বীকার করতে গিয়ে কিছু মুরতাদ সম্প্রদায় বলে থাকে
‘ দুই ঈদ ব্যতীত আর কোন ঈদ নাই ‘ ! নাউযুবিল্লাহ !!
যারা বলে দুই ঈদ ব্যতীত আর কোন ঈদ নাই, তারা কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ অস্বীকারকারী ! আর কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ অস্বীকারকারীরা কাফির |
আসুন আমরা দেখি শরীয়তে কতগুলা ঈদ রয়েছে —
হাদীস শরীফ –
عن حضرت عبيد بن السباق رضي الله عنه مرسلا قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم في جمعة من الجمع يا معشر المسلمين ان هذا يوم جعله الله عيدا
অর্থ : হযরত ওবায়িদ বিন সাব্বাক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু মুরসাল সূত্রে বর্ননা করেন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জুমুয়ার দিন বলেন, হে মুসলমান সম্প্রদায় ! এটি এমন একটি দিন যাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ঈদ স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন !”
দলীল-
√ মিশকাত শরীফ – জুমুয়ার নামাজ অধ্যায় !
√ মুয়াত্তা মালিক শরীফ
√ ইবনে মাজাহ শরীফ
হাদীস শরীফ –
عن حضرت ابن عباس رضي الله انه قرا اليوم اكملت لكم دينكم الايت وعنده يهودي فقال لو نزلت هذه الاية علينا لاتخذناها عيدا فقال ابن اباس رضي الله عنه فانها نزلت في يوم عيدين في يوم جمعة ويوم عرفاة
অর্থ : হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্নিত আছে যে, তিনি একদা – ” আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ন করে দিলাম ” ( সূরা মায়েদা ৩) এ আয়াত শরীফ খানা শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন ! তখন উনার নিকট এক ইহুদী ছিল সে বলে উঠলো, যদি এমন আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো, আমরা আয়াত শরীফ নাযিলের দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করতাম !’ এটা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এ আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে যেদিন একসাথে দুই ঈদ ছিলো – (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন !”
দলীল —
√ তিরমীযি শরীফ
উক্ত হাদীস শরীফে জুমুয়ার দিনের সাথে সাথে আরাফার দিনকেও ঈদের দিন হিসাবে সাব্যস্ত করা হয়েছে |
হাদীস শরীফ —
لكل مؤمن في كل شهر اربعة اعياد اوخمسة اعياد
অর্থ : হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, মু’মিন মুসলমানদের প্রতি মাসে চারটি অথবা পাঁচটি ঈদ রয়েছে | অর্থাৎ প্রতিমাসে চারটি অথবা পাঁচটি সোমবার শরীফ হয়ে থাকে |”
দলীল —
√ কিফায়া শরহে হিদায়া ২য় খন্ড – বাবু ছালাতিল ঈদাইন ,
√ হাশিয়ায়ে লখনবী আলাল হিদায়া !
হাদীস শরীফ —
للصاءم فر حتان فرحة عند فطره و فرحة عند لقاء ربه
অর্থ : হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, রোযাদারের জন্য দুটি ঈদ বা খুশি | একটি হলো তার প্রতিদিন ইফতারের সময় | আর অন্যটি হলো মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাতের সময় !'”
দলীল–
√ বুখারী শরীফ – কিতাবুস সাওম
√ মুসলিম শরীফ
√ মিশকাত শরীফ , রোজার অধ্যায়!
দেখুন, উক্ত হাদীস শরীফে রোজাদার দের জন্য দুটি ঈদ বা খুশির কথা বলা হইছে ! একটা তার ইন্তেকালের পর আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাত ! আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে , ইফতার করার সময় !
ইফতিার দুই প্রকার –
(১) ইফতারে কুবরা !
(২) ইফতারে ছোগরা !
কুবরা হচ্ছে, ঈদুল ফিতর যা হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমানিত ! আর ছুগরা হচ্ছে, রোজাদার প্রতিদিন মাগরিবের সময় করে থাকেন !
এটি প্রতিবছর ২৯ বা ৩০ দিন হয়ে থাকে !
এছাড়া সুন্নত রোজা হিসাবে আরো রোজা রয়েছে, যেমন-
মুুহররম শরীফ মাসে ৯,১০ বা ১০,১১ তারিখ দুইটি রোজা এবং এর সাথে আরো ১ টি রাখা হয়,
মোটা ৩ টি !
শাওয়াল মাসে ৬ টি রোজা রোজা!
যিলহজ্জ শরীফ মাসে ১ হতে ৯ তারিখ পর্যন্ত ৯ টি রোজা !
এবং বাকি ১১ মাসে ৩ করে সুন্নত রোজা , মোট ৩৩ টি রোজা !
এই রোজাদার দের প্রতিটি ইফতার হলো ঈদ !
সুবহানাল্লাহ্!
আসুন আমারা মোট ঈদ সংখ্যা হিসাব করি —>>
বছরে ৫২ টি শুক্রবার + ৫২ টি সোমবার শরীফ + রমাদ্বান শরীফে ৩০ টি + বাকি ১২ মাসে ৩ করে ৩৪ টি + যিলহজ্জ মাসে ৯ টি + মুহররম মাসে ২ টি + পহেলা রজব ১ টি + ২৭ শে রজব ১টি + ১৫ শাবান ১ টি =
( ৫২+৫২+৩০+৩৩+৯+২+১+১)
= ১৮০ টি ঈদ !
সুবহানাল্লাহ্ !
এসব গুলা ঈদ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমানিত !
আল্লাহু আকবার !
অতএব প্রমানিত হলো যে, শরীয়তে দুই ঈদ ব্যতীত আরো অনেক ঈদ আছে ! সুতরাং যারা বলে, দুই ঈদ ব্যতীত আর ঈদ নাই তাদের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কুরআন শরীফ সুন্নাহ শরীফের খেলাফ ও কুফরীমূলক প্রমানিত হলো।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন