বুখারী শরীফ
থেকেই প্রমাণিত লা’মাযহাবীদের ৮ রাকায়াত তারাবীর নামাযের অন্যতম দলীলখানা কতটা
হাস্যকর।
তাদের অন্যতম
দলীল হলো,
হযরত আবূ
সালামাহ্ ইব্নু আবদুর রাহমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি হযরত ‘আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম
উনাকে জিজ্ঞেস করেন, রমযান মাসে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর সালাত কেমন ছিল? তিনি বললেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে এবং অন্যান্য সময় রাতে
এগার রাক’আতের অধিক সালাত আদায় করতেন না। তিনি চার রাক’আত সালাত আদায় করতেন। তুমি
সেই সালাতের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর চার রাক’আত
সালাত আদায় করতেন, এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। অতঃপর
তিনি তিন রাক’আত বিত্র সালাত আদায় করতেন।
(সহীহ
বুখারী: হাদীছ নং ১১৪৭)
এই
হদীছ শরীফ থেকে কয়েকটা পয়েন্ট নোট করুন:
১.
উক্ত ৮ রাকাত নামায রমাদ্বান ও অন্যমাসেও পড়া হতো فِي رَمَضَانَ وَلاَ فِي غَيْرِهِ।
২. তারাবীহ
ও তাহাজ্জুদ একই নামায, যেহেতু তা রমাদ্বান ও গায়রে রমাদ্বানে পড়া হতো।
৩.
সেই নামায ৪ রাকাত করে পড় হতো يُصَلِّي أَرْبَعًا ।
৪. বিতর ৩ রাকাত সহ ১১ রাকাতের বেশি
কখনোই পড়তেন না।
উপরোক্ত হাদীছ
শরীফ এবং সেখান থেকে চিহিৃত পয়েন্টকে সামনে রেখে আলোচনা সামনে এগিয়ে নেয়া যেতে
পারে। আর আলোচনার জন্য শুধু মাত্র বুখরী শরীফের “তাহাজ্জুদ” অধ্যায় থেকেই থেকেই দলীল
দিয়ে প্রমাণ করবো লা’মাযহাবীদের দাবী মিথ্যা।
প্রথমত, আমরা
দেখবো হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাহাজ্জুদের
নামায কখন পড়তেন।
قَالَ، سَمِعْتُ مَسْرُوقًا، قَالَ
سَأَلْتُ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَىُّ الْعَمَلِ كَانَ أَحَبَّ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتِ الدَّائِمُ. قُلْتُ مَتَى كَانَ يَقُومُ
قَالَتْ يَقُومُ إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو الأَحْوَصِ عَنِ الأَشْعَثِ قَالَ إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ قَامَ فَصَلَّى.
হযরত মাসরূক
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত ‘আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-কে জিজ্ঞেস করলাম,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর
নিকট কোন্ ‘আমলটি সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল? তিনি বললেন,
নিয়মিত ‘আমল। আমি জিজ্ঞেস করলাম,
তিনি কখন তাহাজ্জুদের জন্য উঠতেন?
তিনি বললেন,
যখন মোরগের ডাক শুনতে পেতেন। আশ’আস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁর বর্ণনায় বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মোরগের ডাক
শুনে উঠতেন এবং সালাত আদায় করতেন। (বুখারী শরীফ: হাদীছ নং ১১৩২)
عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَزَيْدَ
بْنَ ثَابِتٍ ـ رضى الله عنه ـ تَسَحَّرَا، فَلَمَّا فَرَغَا مِنْ سَحُورِهِمَا
قَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الصَّلاَةِ فَصَلَّى. قُلْنَا
لأَنَسٍ كَمْ كَانَ بَيْنَ فَرَاغِهِمَا مِنْ سَحُورِهِمَا وَدُخُولِهِمَا فِي الصَّلاَةِ
قَالَ كَقَدْرِ مَا يَقْرَأُ الرَّجُلُ خَمْسِينَ آيَةً.
হযরত আনাস
ইব্নু মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এবং যায়দ ইব্নু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সাহ্রী খেলেন। যখন তারা দু’জন
সাহ্রী শেষ করলেন, তখন
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সালাত আদায় করলেন।
[হযরত ক্বাতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন]
আমরা আনাস ইব্নু মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু -কে জিজ্ঞেস করলাম, তাঁদের সাহ্রী
সমাপ্ত করা ও ফজরের সালাত শুরু করার মধ্যে কি পরিমাণ ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, কেউ পঞ্চাশ
আয়াত তিলাওয়াত করতে পারে এতটা সময়। (বুখারী শরীফ: হাদীছ নং ১১৩৪)
حَدَّثَنَا
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ
حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا قَامَ لِلتَّهَجُّدِ مِنَ اللَّيْلِ يَشُوصُ فَاهُ
بِالسِّوَاكِ.
হযরত হুযাইফা
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম রাতের বেলা যখন তাহাজ্জুদ সালাতের জন্য উঠতেন তখন মিস্ওয়াক দ্বারা তাঁর
মুখ পরিষ্কার করে নিতেন। (বুখারী শরীফ : হাদীছ নং
১১৩৬)
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،. وَحَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، قَالَ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ سَأَلْتُ
عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ كَيْفَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِاللَّيْلِ قَالَتْ كَانَ يَنَامُ أَوَّلَهُ وَيَقُومُ آخِرَهُ، فَيُصَلِّي ثُمَّ
يَرْجِعُ إِلَى فِرَاشِهِ، فَإِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ وَثَبَ، فَإِنْ كَانَ
بِهِ حَاجَةٌ اغْتَسَلَ، وَإِلاَّ تَوَضَّأَ وَخَرَجَ.
হযরত আসওয়াদ
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, ‘আয়িশা
আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সালাত
কেমন ছিল? তিনি
বলেন, তিনি
প্রথমাংশে ঘুমাতেন, শেষাংশে
জেগে সালাত আদায় করতেন। অতঃপর তাঁর শয্যায় ফিরে যেতেন, মুআয্যিন
আযান দিলে শীঘ্র উঠে পড়তেন,
তখন তাঁর প্রয়োজন থাকলে গোসল করতেন, নইলে উযূ করে মসজিদের দিকে বেরিয়ে যেতেন। (বুখারী শরীফ: হাদীছ নং ১১৪৬)
বুখারী
শরীফের ১১৩২, ১১৩৪, ১১৩৬, ১১৪৬ নং হাদীছ শরীফ দ্বারা বোঝা গেলো, হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি,
১)
তাহাজ্জুদের নামাযের জন্য রাতে শেষ ভাগে উঠতেন।
২)
তাহাজ্জুদের নামাযের পূর্বে কিছু সময় বিশ্রামও নিতেন।
৩) সাহরী
খাওয়ার পর তিনি তাহাজ্জুদ নামায আদায় করলেন।
এই তিনটা
পয়েন্ট মাথায় রেখে আলোচনা সামনের দিকে অগ্রসর করি। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার রাতের তাহাজ্জুদ নামায কত রাকাত করে আদায় করতেন তা দেখা জরুরী।
বুখারীর উক্ত অধ্যায়েই এটার জবাব দেয়া আছে,
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى
الله عنهما ـ قَالَ إِنَّ رَجُلاً قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ صَلاَةُ
اللَّيْلِ قَالَ " مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ
بِوَاحِدَةٍ ".
হযরত আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একজন জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র
রাসূল! রাতের বেলা সালাতের পদ্ধতি কি? তিনি বললেনঃ
দু’ দু’ রাক’আত করে। আর ফজর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলে এক রাক’আত মিলিয়ে বিত্র করে
নিবে। (বুখারী শরীফ: হাদীছ নং ১১৩৭)
এই হাদীছ
থেকে প্রমাণ হলো, এই নামায ২ রাকাত করে পড়া হতো। অথচ আপনাদের নিশ্চয়ই
লা’মাযহাবীদের দলীল ১১৪৭ নং হাদীছের পয়েন্ট গুলো মনে আছে, সেখানে বলা হয়েছে ৪
রাকাত করে আদায় করতেন।
লা’মাযহাবীদের
দলীল ১১৪৭ নং হাদীছে আছে এই নামায বিতর ৩ রাকাত সহ ১১ রাকাতের বেশি পড়তেন না। এর
পর আসুন দেখা যাক তাহাজ্জুদ নামায কত রাকাত পর্যন্ত পড়তেন,
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو
جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ صَلاَةُ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً. يَعْنِي بِاللَّيْلِ.
হযরত ইব্নু
‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, হযরত নবী
করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সালাত ছিল তের রাক’আত অর্থাৎ রাতে। (বুখারী শরীফ: হাদীছ নং ১১৩৮)
পরে হাদীছ
শরীফেই আছে,
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ،
عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ وَثَّابٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ سَأَلْتُ
عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ عَنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
بِاللَّيْلِ. فَقَالَتْ سَبْعٌ وَتِسْعٌ وَإِحْدَى عَشْرَةَ سِوَى رَكْعَتَىِ
الْفَجْرِ.
হযরত মাসরূক
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, আমি
হযরত হযরত ‘আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-কে
আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর রাতের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ফজরের দু’
রাক’আত সুন্নাত বাদে সাত বা নয় কিংবা এগার
রাক’আত। (বুখারী শরীফ: হাদীছ নং ১১৩৯)
এ হাদীছ
দুখানা থেকে দেখা গেলো ১১ রাকাতের বেশি ১৩ রাকাতও পড়তেন। শুধু তাই নয় তার কম বিতর
বাদে ৪, ৬ রাকাত নামাযও পড়তেন।
এখন পরিশেষে
লা’মাযহাবীদের বলতে চাই, তোমরা যদি বুখারী শরীফের ১১৪৭ নং হাদীছ শরীফের দলীল
দিয়ে তারাবীর নামায ৮ রাকাত বানাতে চাও সেই সাথে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ একই প্রমাণ
করতে চাও তাহলে সর্বপ্রথম তোমাদের যা করতে হবে,
১) চার
রাকাত করে তারাবীহ পড়বে।
২) রাতের
শেষে ঘুম থেকে উঠে তারাবীহ পড়বে।
৩) আর
যেহেতু তোমরা বুখারী ছাড়া কিছু মানো না তাই আজ থেকে ৪ অথবা ৬ রাকাত করেও তারাবী
পড়বে।
৪) আর বিতির
নামায ১ রাকাত পড়া বাদ দিয়ে ৩ রাকাত পড়বে।
তা না করলে
তোমরা সহীহ হাদীছ বিরোধী বলে সাব্যস্ত হবে। সূতরাং সাবধান!
আর শেষ কথা
হলো সারা বছর তোমাদের তাহাজ্জুদের (তাদের দৃষ্টিতে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ একই) কোন
খোঁজ নাই রোজার মাসে এটা নিয়ে ফতোয়াবাজী কেন? তোমাদের কাছে তো তাহাজ্জুদ নামায
মুস্তাহাব। তাহলে এটা পড়া না পড়ায় তোমাদের কি যায় আসে?
এবার সাধারণ
মানুষদের জন্য বলতে হয়, লা’মাযহাবীদের ১১৪৭ নং হাদীছ খানা মূলত কোন দলীলই না। এ
হাদীছ থেকে কোন দলীল নেয়া যাবে না। কারন অন্যন্য সহীহ হাদীছ সমূহের সাথে উক্ত বর্ণনা
সাংঘর্ষিক। যা আপনারা উপরোক্ত আলোচনা থেকেই দেখতে পেলেন।
হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা
আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত উক্ত হাদীছ
শরীফকে হযরত মুহাদ্দিসীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা (مضطرب) সন্দেহযুক্ত বলেছেন।
এ প্রসঙ্গে বুখারী শরীফেরই বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ “ফতহুল বারী” ও “উমদাতুল কারী”তে
উল্লেখ আছে-
قال القرطبي اشكلت روايات عائشة على
كثير من أهل العلم حتى نسب بعضهم حديثها إلى الاضطراب
অর্থঃ- ইমাম হযরত
কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অধিকাংশ আলিমগণ উক্ত হাদীছ শরীফ-এর
ব্যাপারে মতভেদ করেছেন। এমন কি কেউ কেউ উক্ত
হাদীছ শরীফকে (مضطرب)
সন্দেহযুক্ত বলে আখ্যায়িত করেন। (ফাতহুল বারী শরহে বুখারী
৩/২১, উমদাতুল কারী ১১/২৯৪,
মিরআতুল মাফাতীহ ৪/১৭০)
কারণ, স্বয়ং হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা
আলাইহাস সালাম উনার হতে সহীহ্ সনদে তেরো রাকায়াতের বর্ণনাও রয়েছে। কাজেই مضطرب সন্দেহযুক্ত
হওয়ার কারণে উক্ত হাদীছ শরীফকে তারাবীহ্ নামাযের দলীল হিসাবে পেশ করা হাদীছ শরীফ-এর
উসূল মোতাবিক সম্পূর্ণই অশুদ্ধ ও অগ্রহণযোগ্য।
কারণ, উসুল হলো- (مضطرب) সন্দেহযুক্ত হাদীছ শরীফ-এর (اضطراب) বা সন্দেহ যতক্ষণ পর্যন্ত দূর করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত হাদীছ শরীফ দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হবেনা। অতএব,
উক্ত হাদীছ শরীফকে দলীল হিসাবে পেশ করতে হলে, প্রথমে
উহার (اضطراب)
বা সন্দেহ দূর করতে হবে।
সূতরাং বুখারী
শরীফের উক্ত অধ্যায় থেকেই প্রমাণ হলো, লা’মাযহাবীদের ১১৪৭ নং হাদীছ দলীল হিসাবে
গ্রহনযোগ্য নয়। এ থেকে কখনোই তারাবীহ নামায ৮ রাকাত প্রমাণ হয় না।
খুবই হাস্যকরভাবে কিছু কু যুক্তি দিয়ে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তোলা খুবই সহজ আমরা যারা আওয়াম, তাদের মাঝে কিছু কিছু এমনও আছে যারা উভয় পক্ষের দেয়া দলিল সামনে নিয়ে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে নিজে সিদ্ধান্ত নেয়। আপনার উচিত ছিল সর্বপ্রথম কেয়ামুল লাইল, সালাতুল লাইল, তাহাজ্জুদ, রমজানের সালাত, এবং তারাবি যে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন সালাত তা ব্যাখ্যা করা। এর পর আবু সালামা (রাঃ) রমজানের সালাত বলে (كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَمَضَانَ ) কোন সালাতের কথা জানতে চেয়েছেন, সেটার নাম যে তারাবি এবং তারাবি একটি ভিন্ন আঙ্গিকের সালাত তা সহিহ হাদিস দিয়ে প্রমাণ করা। অপেক্ষায় রইলাম।
উত্তরমুছুন