হযরত তাবিয়ী,ইমাম-মুজতাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ,ঈদে আযম, ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের ধারা অব্যাহত বা জারী রেখেছেন, রাখছেন ,রাখবেন।
বদ আক্বিদা , বদ মাযহাবের , বাতিল ফিরকার লোকেরা অপপ্রচার করে থাকে যে ইমাম-মুজতাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগন পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরিফ পালন করেন নাই ।
নাউযুবিল্লাহ ।
অথচ সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত যে সকল যুগে পবিত্র সাইয়্যিদুলা আইয়াদ শরিফ পালন হয়ে আসছে। নিম্নে দলীল সমূহ পেশ করা হলো–
যেমন এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট তাবিয়ী, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত,যিনি শতাধিক সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের সাক্ষাত মুবারক লাভ করেছিলেন, সেই বিখ্যাত ইমাম হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قال الحسن البصرى رحمة الله عليه وَدِدْتُّ لَوْ كَانَ لِىْ مِثْلُ جَبَلِ اُحُدٍ ذَهْبًا فَاَنْفَقْتُهٗ عَلٰى قِرَاءَةِ مَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: ‘আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকতো তাহলে তা পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ব্যয় করতাম।’
সুবহানাল্লাহ!
দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা
শাফেয়ী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قَالَ اَلاِمَامُ الشَّافِعِىُّ رَحِمَهُ اللهُ مَنْ جَمَعَ لِمَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اِخْوَانًا وَهَيَّاَ طَعَامًا وَاَخْلٰى مَكَانًا وَعَمَلَ اِحْسَانًا وَصَارَ سَبَبًا لِقِرَائَتِهٖ بَعَثَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَيَكُوْنُ فِىْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ.
অর্থ: ‘যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে লোকজন একত্রিত করলো, খাদ্য তৈরি করলো, জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং এ জন্য উত্তমভাবে তথা সুন্নাহ ভিত্তিক আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ ছলিহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং উনার ঠিকানা হবে জান্নাতে নায়ীমে।’ সুবহানাল্লাহ!
দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা ।
সাইয়্যিদুত্ ত্বায়িফাহ হযরত জুনাইদ বাগদাদী ক্বাদ্দাসাল্লাহু সিররাহু রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قال جنيد البغدادى رحمة الله عليه مَنْ حَضَرَ مَوْلِدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَظَّمَ قَدَرَهٗ فَقَدْ فَازَ بِالاِيْمَانِ.
অর্থ: “যে ব্যক্তিপবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আয়োজনে উপস্থিত হবে এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করবে সে বেহেশ্তী হবে।” সুবহানাল্লাহ!
দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা
বিখ্যাত ইমাম হযরত ইমাম মারূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قال المعروف الكرخى رحمة الله عليه مَنْ هَيَّأَ طَعَامًا لاَجْلِ قِرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَمَعَ اِخْوَانًا وَاَوْقَدَ سِرَاجًا وَلبِسَ جَدِيْدًا وَتَبَخَّرَ وَتَعَطَّرَ تَعْظِيْمًا لِمَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَشَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الْفِرْقَةِ الاُوْلٰى مِنَ النَّبِيّنَ وَكَانَ فِىْ اَعْلٰى عِلِّيِّيْن.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিসে আলোর ব্যবস্থা করে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন পোশাক পরিধান করে, সুঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে, আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস সালামগণের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাক্বামে অধিষ্ঠিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ্!
দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা ।
হযরত ইমাম সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قال السر سقتى رحمة الله عليه مَنْ قَصَدَ مَوْضعًا يُقْرَأُ فِيْهِ مَوْلِِدُ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ قَصَدَ رَوْضَةً مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ لاَنَّهٗ مَا قَصَدَ ذٰلِكَ الْمَوْضعَ اِلا لِمُحَبَّةِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করলো সে যেন নিজের জন্য জান্নাতে রওযা বা বাগান নির্দিষ্ট করলো। কেননা সে তা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর আল্লাহ পাক- উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ্!
দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা
হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
مَا مِنْ شَخْصٍ قَرَاَ مَوْلِدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى مِلْحٍ اَوْ بُرٍّ اَوْشَىء اٰخَرَ مِنَ الْمَأكُوْلاتِ اِلا ظَهَرَتْ فِيْهِ الْبَركَةُ فِىْ كُلِّ شَىء. وَصَلَ اِِلَيْهِ مِنْ ذٰلِكَ الْمَأكُوْلِ فَاِنَّهٗ يَضْطَرِبُ وَلا يَسْتَقِرُّ حَتى يَغْفِرَ اللهُ لاٰكِلِهٖ.
অর্থ: যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্য দ্রব্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন, তাতে বরকত হবেই। উক্ত খাদ্য-দ্রব্য মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাক- উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয় না।” সুবহানাল্লাহ!
দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৯ পৃষ্ঠা
এই উপমহাদেশে যিনি হাদীছ শাস্ত্রের প্রচার-প্রসার করেছেন, যিনি ক্বাদিরিয়া তরীক্বার বিশিষ্ট বুযূর্গ, ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
مَنْ عَظَّمَ لَيْلَةَ مَوْلِدِهٖ بِمَاۤ اَمْكَنَهٗ مِنَ التَّعْظِيْمِ وَالاِكْرَامِ كَانَ مِنَ الْفَائزِيْنَ بِدَارِ السَّلامِ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি তার সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করবে, সে জান্নাতে বিরাট সফলতা লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ্!
দলীল-
√ মাছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খন্ড
মুসলমানদের মধ্যে পৃথিবীতে যিনি সবচেয়ে বেশি কিতাব লিখেছেন। যার তাফসির সকল মাদ্রাসায় পড়ানো হয়, যিনি ৭০ বারেরও বেশি জাগ্রত অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাত পেয়েছেন, যিনি উনার যামানার মুজাদ্দিদ এবং সুলত্বানুল আরিফীন ছিলেন, হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
قَالَ سُلْطَانُ الْعَارِفِيْنَ الْاِمَامُ جَلالُ الدِّيْنِ السُّيُوْطِىُّ قَدَّسَ اللهُ سِرَّهٗ وَنَوَّرَ ضَرِيْحَهُ فِىْ كِتَابِهِ الُمُسَمّٰى الْوَسَائِلِ فِىْ شَرْحِ الشَّمَائِلِ” مَا مِنْ بَيْتٍ اَوْ مَسْجِدٍ اَوْ مَحَلَّةٍ قُرِئَ فِيْهِ مَوْلِدُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلا حَفَّتِ الْمَلٰئِكَةُ ذٰلِكَ الْبَيْتَ اَوِ الْمَسْجِدَ اَوِ الْمَحَلًّةَ صَلَّتِ الْمَلٰئِكَةُ عَلٰى اَهْلِ ذٰلِكَ الْمَكَانِ وَعَمَّهُمُ اللهُ تَعَالٰى بِالرَّحْمَةِ وَالرِّضْوَانِ واَمَّا الْمُطَوَقُّوْنَ بِالنُّوْرِ يَعْنِىْ جِبْرَائيلَ وَمِيْكَائِيْلَ وَاِسْرَافِيْلَ وَعَزْرَائِيْلَ عَلَيْهِمُ السَّلامُ فَاِنَّهُمْ يُصَلُّوْنَ عَلٰى مَنْ كَانَ سَبَبًا لِقَرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاِذَا مَاتَ هَوَّنَ اللهُ عَلَيْهِ جَوَابَ مُنْكِرٍ وَنَكِيْرٍ وَيَكُوْنُ فِىْ مَقْعَدِ صِدْقٍ عِنْدَ مَلِيْكٍ مُّقْتَدِرٍ.
অর্থ: “যে কোন ঘরে অথবা মসজিদে অথবা মহল্লায় পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করা হয় সেখানে অবশ্যই আল্লাহ পাক- উনার ফেরেশতাগণ বেষ্টন করে নেন। আর উনারা সে স্থানের অধিবাসীগণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন। আর আল্লাহ পাক উনাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন। আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার ফেরেশতা অর্থাৎ হযরত জিবরায়ীল, মীকায়ীল, ইসরাফীল ও আযরায়ীল আলাইহিমুস সালামগণ মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীগণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করেন। যখন উনারা ইনতিকাল করেন তখন আল্লাহ পাক উনাদের জন্য মুনকার-নাকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ করে দেন। আর উনাদের অবস্থান হয় আল্লাহ পাক- উনার সন্নিধানে ছিদ্দিক্বের মাক্বামে।” সুবহানাল্লাহ্!
দলিল-
√ ওয়াসিল ফি শরহে শামায়িল
√ আন নিয়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা
উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক বর্ননার মাধ্যমে প্রমান হলো হযরত তাবেয়ী, মাযহাবের ইমাম, মুস্তাহিদ , মুজাদ্দিদ এবং আওলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা সকলেই পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন ।
সুবহানাল্লাহ্ !
অথচ ওহাবী/ দেওবন্দী/ খারেজী/ সালাফি ইত্যাদি বাতিল ফির্কার লোকেরা এর বিরুদ্ধে একটা দলীলও দিতে পারবেনা যে, কোন ইমাম মুস্তাহিদ গন মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতে নিষেধ করেছেন ।
সূতরাং প্রামন হলো যারা পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করে তারা মুসলমান দের দল
খুব সুন্দর দলিল ভিত্তিক লেখা।
উত্তরমুছুনআল্লাহ্ এলমে নাফে দান করুন।
উত্তরমুছুনআমিআ
উত্তরমুছুনAmin
উত্তরমুছুন