মীলাদ শরীফ এই সুমহান আমলটা স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানায় সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা পালন করেছেন !
যেটা সহীহ হাদীস শরীফ উনার কিতাবে এরশাদ হয়েছে !!
হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন এমন এক ব্যক্তিত্ব যার সম্পর্কে সারা দুনিয়া বাসী সবার আস্থা রয়েছে ! মুসলমানদের ভিতর সব চাইতে বেশি কিতাব লিখেছেন, যিনি ছিলেন দশম হিজরী শতকের
মুজাদ্দিদ , ইসলামের এমন কোন বিষয় নাই যে বিষয়ে তিনি কিতাব লিখেন নাই ! তিনি ছিলেন হাফিযে হাদীস ,তিনি তিন লক্ষ এরও বেশি হাদীস শরীফ এর হাফিয ছিলেন !
তাফসীর শাস্ত্রে উনার ছিল অগাধ ইলিম !
উনাকে তাজুল মুফাসসিরিন বলা হয় ! তিনি ছিলেন যামানার লক্ষস্থল ইমাম ,খতেমুল হুফ্ফাজ , রয়িসুল মুহাদ্দেসীন , রেজাল শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ!
যিনি জাগ্রত অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে সত্তর বারের বেশি দেখেছেন ! উনার তাফসির সমগ্র মাদ্রাসায় পড়ানো হয় ,উনার তাফসির না পড়ে কেউ মুফাসসির হয় না, তিনি আর কেউ নন, সবার
পরিচিত তাফসিরে জালালাইন
শরীফ এর মুসান্নিফ হযরত আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি !
উনার সম্পর্কে বলা আছে —
رايت رسول الله صلي الله عليه و سلم في اليقظة بضعا و سبعين مرة
অর্থ : হযরত জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি আখেরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জাগ্রত অবস্থায় সত্তর বারের বেশি দেখেছি !”
দলীল-
√ আল ইয়াকীতু ওয়াল জাওয়াহের ১ম খন্ড ১৩২ পৃষ্ঠা !
√ দালায়িলুছ ছুলুক
সেই বিখ্যাত ইমাম, হাফিযে হাদীস, মুজাদ্দিদে জামান জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব ” সুবলুল
হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম “” এ দুই খানা হাদীস শরীফ বর্ণনা করেছেন!!!
হাদীসগুলো উল্লেখ করা হলো —
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তায়ালা আনহুমগণউনারা ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহুআলাই
হি ওয়া সাল্লামউপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন। অতঃপর সেখান
থেকে পর্যায়ক্রমে এ নিয়মপালিত হয়ে আসছে।
এ প্রসঙ্গে হাদীছশরীফ-এ
ইরশাদ হয়েছে,–>>
ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﺍﻟﺪَّﺭْﺩَﺍﺀِ
ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﺍَﻧَّﻪﻣَﺮَّ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻟٰﻰﺑَﻴْﺖِ ﻋَﺎﻣِﺮِ
ﺍﻻَﻧْﺼَﺎﺭِﻯِّ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌَﻠِّﻢُ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻻَﺑْﻨَﺎﺋِﻪﻭَﻋَﺸﻪِﺗَﺮْﻴِ ﻭَﻳَﻘُﻮْﻝُ
ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓُ
ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓَﺘَﺢَﻟَﻚَ ﺍَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِ
ﻭَﺍﻟْﻤَﻼﺋِﻜَﺔُ ﻛُﻠُّﻬُﻢْﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭْﻥَ ﻟَﻚَ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ
ﻓِﻌْﻠَﻚَ ﻧَﺠٰﻰﻧَﺠٰﺘَﻚَ .
অর্থ: হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিতআছে যে,একদা তিনি রসূলেপাকছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আমিরআনছারী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুউনার গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেনযে, তিনি বিলাদত শরীফউপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে উনারসন্তানাদি এবং আত্মীয়- স্বজন,জ্ঞাতি-গোষ্ঠী,
পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিয়ে আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহহুযূর পাক
ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতশরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেনএবং বলছেন, এই দিবস; এই দিবস(অর্থাৎ এই
দিবসে রসূলুল্লাহছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামতিনি যমীনে তাশরীফ এনেছেনএবং ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটেছে)।বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাবলী শ্রবণকরে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্তখুশি হয়ে বললেন,”নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তিনি উনার রহমতের দরজা আপনার জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফেরেশতাগণ উনারা আপনারজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেনএবং যে কেউ আপনার মতো এরূপ কাজকরবে, সেও আপনার মতো নাজাত (ফযীলত) লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদহয়েছে,–>
ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ
ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﺍَﻧَّﻪٗﻛَﺎﻥَ
ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻓِﻰْ ﺑَﻴْﺘِﻪٖ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗٖﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ،ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭَﻥْ
ﻭَﻳُﺤَﻤِّﺪُﻭْﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺎِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﻠَّﺖْﻟَﻜُﻢْ
ﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻰْ
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
হতে বর্ণিতআছে যে, তিনি একদা বিলাদত শরীফউপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে উনারনিজগৃহে ছাহাবীগণকে সমবেতকরে আল্লাহ
পাক উনার হাবীব হুযূরপাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর
ঘটনাসমূহশুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং আল্লাহপাক উনার
প্রশংসা তথা তাসবীহ- তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহপাক উনার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর (ছলাত-সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠকরছিলেন। এমন সময়
রসূলে পাকছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপস্থিত হয়ে বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশকরতে দেখে বললেন:
“আপনাদের জন্যআমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেলো।”
সুবহানাল্লাহ!
দলীল—
√ সুবুলুলহুদা ফী মাওলিদিল মুস্তফা ছল্লাল্লাহুআলাই হি ওয়া সাল্লাম।
লেখক- হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি !
√ মাওলুদুল কবীর -হাফিযে হাদীস , ইমামইবনে হাযর মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি !
√ আত তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযার -শায়খ হাফিযে হাদীস আবিল খত্তাব ইবনে দাহিয়্যা রহমাতুল্লাহি আলাইহি !
√ দুররুল মুনাযযাম – সপ্তম
অধ্যায় – প্রথম পরিচ্ছেদ
√ ইশবাফল কালাম
√ হাক্বীকতে মুহাম্মদী মীলাদে আহমদী ৩৫৫ পৃষ্ঠা !
সুবহানাল্লাহ্ !!
সুতরাং অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমান হলো হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে মীলাদ শরীফ হয়েছে এবং তিনি নিজে এই কাজের জন্য কি ফযীলত হবে সেটা বর্ননা করেছেন !!
বি:দ্র : যারা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধীতা করেন, তারা অপ্রাসঙ্গিক তর্ক না করে পোস্টটা দলীল দ্বারা খন্ডন করুন !
দলীল ছাড়া কারো কথা গ্রহনযোগ্য নয় !
ধন্যবাদ
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন