কুল কায়িনাতের ঈদ,সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন নতুন আমল নয় ! সমগ্র মুসলিম জাহান এই মহা সম্মানিত ঈদ পালন করেছেন ! মহান রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে খুশি প্রকাশ করেছেন, মাহফিল করেছেন ! সুবহানাল্লাহ্!!
এ বিষয়টি বিখ্যাত হাদীস শরীফ বিশারদ, লক্ষাধিক হাদীস শরীফের হাফিজ, বিখ্যাত মুহাদ্দিস , বুখারী শরীফের
ব্যাখ্যা কারক, হাফিজে হাদীস, আল্লামা ইমাম কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে বর্ননা করেন–
ﻭﻻﺯﺍﻝ ﺍﻫﻞ ﺍﻻﺳﻼﻡ ﻳﺤﺘﻔﻠﻮﻥ ﻳﺸﻬﺮ ﻣﻮﺍﻟﺪﻩ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﻟﻮﻻﺀﻡ ﻭ ﻳﺘﺼﺪ ﻗﻮﻥ ﻓﻲ ﻟﻴﺎﻟﻴﻪ ﺑﺎﻧﻮﺍﻉ ﺍﻟﺼﺪﻗﺎﺕ ﻭﻳﻈﻬﺮﻭﻥ ﺍﻟﺴﺮﻭﺭﻳﺮﻳﺪﻭﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺒﺮﺍﺕ ﻭ ﻳﻌﺘﻨﻮﻥ ﺑﻘﺮﺍﺓ ﻣﻮﻟﺪ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ ﻭﻳﻈﻬﺮ ﻋﻠﻬﻢ ﻣﻦ ﺑﺮﻛﺎﺗﻪ ﻛﻞ ﻓﻀﻞ ﻋﻤﻴﻢ ﻭ ﻣﻤﺎ ﺟﺮﺏ ﻣﻦ ﺧﻮﺍﺻﻪ ﺍﻧﻪ ﺍﻣﺎﻥ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻌﺎﻡ ﻭﺑﺸﺮﻱ ﻋﺎﺟﻠﺔ ﺑﻨﻴﻞ ﺍﻟﺒﻐﻴﺔ ﻭ ﺍﻟﻤﺮ ﺍﻡ ﻓﺮﺣﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻣﺮﺀ ﺍﺗﺨﺬ ﻟﻴﺎﻟﻲ ﺷﻬﺮ ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺍﻟﻤﺒﺎﺭﻙ ﺍﻋﻴﺎﺩ ﺍﻟﻴﻜﻮﻥ ﺍﺷﺪ ﻋﻠﺔ ﻋﻠﻲ ﻣﻦ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﺮﺽ ﻭ ﻋﺘﺎﺩ ﻭﻟﻘﺪ ﺍﻃﻨﺐ
অর্থ : হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের মাসে মুসলিম মিল্লাত সর্বদা মাহফিল অনুষ্ঠিত করে আসছে, আনন্দের সাথে খাওয়া- দাওয়া তৈরী করছে এবং খাওয়ার দাওয়াত করে আসছে ! এই মহান রাতে তারা বিভিন্ন রকমের দান খয়রাত এবং আনন্দ প্রকাশ করে থাকে, এবং ভালো কাজ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধিই
করে আসছে। তারা বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে মীলাদ শরীফ পড়ে আসছে। যার বরকতে তাদের উপর আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ বরাবরই হচ্ছে । এর বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে এটা পরীলক্ষীত যে, মীলাদ শরীফ মাহফিলের কারনে ঐ বছর নিরাপত্তা কায়েম থাকে এবং সকল উদ্দেশ্য পূরনে তড়িৎ সুসংবাদ প্রবাহিত হয় । অতএব আল্লাহ তায়ালা ঐ ব্যক্তির উপর অসংখ্য রহমত বর্ষন করুন, যিনি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাসে প্রতিটি রাতকে ঈদ বানিয়ে নিয়েছেন !আর ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই ঈদ তাদের অন্তরে কঠিন মছিবত হয়ে যায় যাদের অন্তরে ব্যাধি ও শত্রুতা আছে ।” (দলীল-মাওয়াহেবুল লাদুনীয়া ১ম খন্ড ২৭ পৃষ্ঠা মিসর থেকে প্রকাশিত)
আসুন এবার আমরা দেখি,হাফিজে হাদীস আল্লামা কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আল উপরোক্ত বক্তব্য মুবারক থেকে যেসব বিষয় প্রমানিত হচ্ছে–
★ পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাসে মীলাদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠান করা মুসলিম মিল্লাতের ঐতিহ্যবাহী তরিকা !
★ মুসলিম মিল্লাত এই মহান মীলাদ শরীফ উনার রাতে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করে এবং দান সদকা করে আসছে !
★ মহান রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে ঈদ পালন করা মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী আমল !
★ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রাতে অধিক থেকে অধিক হারে নেক কাজ করা মুসলমানদের একটি প্রিয় তরীকা হিসাবে গন্য হয়ে আসছে !
★ মহান রবীউল আউয়াল মাসে মীলাদ শরীফ পড়া এবং মীলাদ শরীফ পড়ার বৈশিষ্ট্য মন্ডিত বিশেষ আয়োজন
করা মুসলমানদের একটি অত্যন্ত প্রিয় অনুশাসন হিসাবে বিবেচিত !
★ মীলাদ শরীফ উনার মহান বরকতে মীলাদ শরীফ পাঠকারী দের উপর আল্লাহ তায়ালার ব্যাপক অনুগ্রহ সর্বদা বর্ষিত হয়ে আসছে !
★ মীলাদ শরীফ মাহফিলের বৈশিষ্ট্য সমূহ হতে একটি অতিব সত্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যে বছর এই মীলাদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, ঐ গোটা বছরই পরম নিরাপদে অতীত হয় !
★ মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিলের অনুষ্ঠান উদ্দেশ্য পূরনে সুভ সংবাদ প্রদানকারী !
★ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রাত্রিতে আনন্দ উদযাপনকারী মুসলমানগন আল্লাহ তায়ালার রহমতের ভাগিদার হয় !
★ পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে মীলাদ শরীফ মাহফিল আয়োজন করা এবং ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাসে প্রত্যকটি রাতেই প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের আনন্দ উদযাপন করা ঐ জাতীয় লোকদের জন্য কঠিন মছিবত, যাদের অন্তরে নাপাকি আছে এবং হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে দুশমনি আছে !””
হাদীস শরীফে আছে –
ﻣﺎ ﺭﺍﻩ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻮﻥ ﺣﺴﻨﺎ ﻓﻬﻮ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺴﻦ
অর্থ : মুসলমানগন যে কাজকে ভাল এবং উত্তম মনে করেন, আল্লাহ পাক উনার নিকটও তাই ভালো ও উত্তম ” (দলীল- মুয়াত্তায়ে ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি, আবু দাউদ শরীফ)
সকল মুসলমান উনারা পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাকে ভাল এবং উত্তম মনে করেছেন ! তাই এটা আল্লাহ পাক উনার নিকটও ভালো এবং উত্তম ! এর বিরোধীতা করা আল্লাহ পাক উনার
বিরোধিতার নামান্তর ! উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি চিত্র প্রস্ফুটিত হলো ! সুবহানাল্লাহ্ !!
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন