রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০

তাওয়াক্কুল ছোঁয়াচে ও সেফটি ইকুইপমেন্টের সাথে কোরিলেশন তৈরী করা কি সম্ভব?


অনেকে প্রশ্ন করছেন মেনে নিলাম ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই। কিন্তু সর্তকতার জন্য সেফটি ইকুইপমেন্ট (মাষ্ক, গ্লাভস, পিপিই, হ্যান্ড সেনিটাইজার) ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবো না কেন?
নিজের দাবিকে পোক্ত করতে উনার দলীল হিসাবে হাদীছ শরীফও ও যুক্তিও দিচ্ছেন, "তোমরা উট বেঁধে তারপর তাওয়াক্কুল কর।” বা “মশা থেকে বাঁচার জন্যে মশারী কেন ব্যবহার করে মানুষ?

বিষয়টা বুঝতে আসলে একটু গভীরভাবেই চিন্তা করতে হবে। প্রথমেই তাওয়াক্কুল বিষয়টা সম্পর্কে আপনাকে বুঝতে হবে। তাওয়াক্কুল অর্থ হচ্ছে আল্লাহ পাকের প্রতি ভরসা করা। অর্থাৎ আল্লাহ পাক আমাকে হিফাজত করবেন/ কোন একটা বিষয়ে সাহায্য করবেন এর দৃঢ় ভরসা রেখে এগিয়ে যাওয়া। সেই সাথে কল্যান হোক বা ক্ষতি সর্বাবস্থায় আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা।

অপরদিকে যেকোন রোগ সম্পর্কেই বলা হয়েছে তা সংক্রমন করতে পারে না। আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা রোগ দেন, রোগের নিজের কোন সংক্রমণ ক্ষমতা নেই। সেক্ষেত্রে আপনার যদি রোগের ফয়সালা আল্লাহ পাকের তরফ থেকে হয়েই থাকে আপানি সেফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করলেও রোগ হবেই। বর্তমানে সেটা কিন্তু আমরা দেখতেও পাচ্ছি। পত্রিকায় এসেছে, তিন মাস বাসায় থেকেও করোনা আক্রান্ত হলেন সাংবাদিক আবেদ খান (https://bit.ly/2AbsmDJ) এছাড়াও আরো অনেকে পূর্ণ প্রোটেকশন নিয়েও আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন অসূখে।

এখন আপনি যদি বিশ্বাসই করেন ছোঁয়াচে বলে কোন রোগ নেই তবে সেইফটি ইকুইপমেন্টের প্রশ্ন আসে কেন? হাদীছ শরীফে এসেছে, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, ছোঁয়াচে বলে কোন রোগ নেই (বুখারী শরীফ ৫৭০৭, বুখারী শরীফ ৫৭১৭, মুসলিম শরীফ ৫৯২০)

পরিষ্কার বোঝা যায় কোন রোগীর সংস্পর্শে আসলে, স্পর্শ করলে, খাবার খেলে, বিছানা ব্যবহার করলেও সে রোগের এ ক্ষমতা নেই যে আপনাকে সংক্রমিত করবে। এ বিষয়টা মানুষ যাতে পরবর্তীতে ভালো ভাবে অনুধাবন করতে পারে সে জন্য স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন আমল করে দেখিয়ে গেছেন।

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে যে, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজন কুষ্ঠরোগীর হাত ধরলেন, অতঃপর তার হাতকে উনার সাথে (খাবার খাওয়ানোর জন্য) স্বীয় খাবারে পাত্রে প্রবিষ্ট করলেন। এরপর বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নামে খান, মহান আল্লাহ পাকের উপর ভরসা রাখুন।” (তিরমিযী শরীফ ১৮১৭)

এই হাদীছ শরীফেই বরং তাওয়াক্কুল বা ভরসার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগীর রোগ থেকে কোন রূপ বাঁচার জন্য কোন সেইফটি ব্যবহার না করে বা করতে না বলে বরং একই সাথে খাবার খেয়ে তাওয়াক্কুল করার কথা বলে এটাই বুঝিয়ে দিলেন রোগ ছোয়াঁচে হবে না সেকারনে সেইফইটি ইকুইপমেন্টের কোন প্রয়োজন নেই। বরং আল্লাহ পাকের প্রতি ভরসা রাখতে হবে এ বিষয়ে।

উম্মুল মু’মিনিন হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের একজন আযাদকৃত গোলাম ছিলো যে কুষ্ঠরোগী ছিলো। সে আমার থালায় খাবার খেতো, আমার পেয়ালায় পানি পান করতো এবং আমাদের (বাড়ির) বিছানায় ঘুমাতো। (তাহযিবুল আছার লি তাবারী ৪/৬, ফতহুল বারী ১০/১৫৯, শরহে সহীহুল বুখারী লি ইবনে বাত্তাল ৯/৪১০, শরহে নববী আলা মুসলিম ৭/৩৯৩, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/২০, আওনুল মা’বুদ ৯/৮৭৬)

রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য যদি সেইফটি ব্যবস্থা বা সর্তকতার প্রয়োজন হতো তাহলে কি উক্ত গোলামের এই ব্যবস্থা হতো? তাকে কি একই খাবার পাত্র/ পেয়ালা/ বিছানার সুযোগ দেয়া হতো?

তোমরা উট বেঁধে তারপর তাওয়াক্কুল কর।” বা “মশা থেকে বাঁচার জন্যে মশারী  ব্যবহার।” ইত্যাদি সর্তকতার মত উক্ত গোলামের বিছানা, বালিশ, খাবার পাত্র, থাকার জায়গা আলাদা করে দিয়ে তাওয়াক্কুলের প্রকৃত শিক্ষার সুযোগ থেকে কেন বঞ্চিত করা হলো ? নাউযুবিল্লাহ।

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

অর্থ: “(তোমরা) অন্ধের সাথে, ল্যাংড়ার সাথে এবং অসুস্থদের সাথে খাবার খেতে পারো, তাতে কোন অসুবিধা বা বিপদ নেই।” (সূরা নূর শরীফ :  আয়াত শরীফ ৬১)

‘মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ এর’ ‘আল আকলু মা‘আল মাজযূম বা কুষ্ঠরোগীর সাথে খাবার খওয়া’ নামক অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে,

অর্থ: “লোকজন অন্ধ, ল্যাংড়া এবং অসুস্থ লোকদের সাথে খাবার খেতে ভয় পেতো। তখন (সূরা নূর শরীফ ৬১ নং) এই আয়াত শরীফ নাযিল হন-

‘(তোমরা) অন্ধের সাথে, ল্যাংড়ার সাথে এবং অসুস্থদের সাথে খাবার খেতে পারো, তাতে কোনো অসুবিধা বা বিপদ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ ৫/১৪২)

অর্থাৎ রোগ রোগী থেকে আসতে পারে এই ভয়ে জাহেলী যুগের লোকেরা ভীত ছিলো তারাই প্রোটেকশনের নামে রোগীদের এড়িয়ে চলতো। আর তাদের এই মন্দ ধারনা রদ করতে মহান আল্লাহ পাক আয়াত শরীফও নাযিল করতেন। ইসলাম হচ্ছে এমন এক সৌন্দর্য যে, অসুস্থ লোকের সেবা, তাদের মাথায় হাত বুলানো, খাবার খাওয়ানোর ব্যাপারে অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা  ফজিলতের আলোচনা করা হয়েছে। মনগড়া সেইফটির কথা বলে এড়িয়ে যেতে নয়।

বর্তমানের তথাকথিত চিকিৎসা বিজ্ঞান যেরোগকে খুবই সংক্রমক বলতো তার নাম হচ্ছে গুটি বসন্ত। “তোমরা উট বেঁধে তারপর তাওয়াক্কুল কর।” বা “মশা থেকে বাঁচার জন্যে মশারী  ব্যবহার।” এই মতবাদের ভাইদের হিসাবনুযায়ী  যদিও রোগের সংক্রমক ক্ষমতা নেই কিন্তু গুটি বসন্ত থেকে সেইফটির জন্য সেইফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা আবশ্যক ছিলো। অথচ দ্বীন ইসলামে কি দেখতে পাই?  


“হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে জা’দাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ একজন গুটিবসন্ত যুক্ত কালো লোক আসলেন, উনার গুটিবসন্তের কারণে গায়ের চামড়া উঠে গেছে। তিনি কারো সাথে না বসে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত ব্যক্তিকে ধরে উনার পাশে বসালেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪১ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৭)

এখানে আপনি কি তাওয়াক্কুল শিখলেন? হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথ অনুযায়ী না আপনার নিজস্ব মত অনুযায়ী?

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এটাই শিক্ষা দিয়েছেন, তুমি তোমার রব মহান আল্লাহ পাক এর প্রতি বিনয়ী হয়ে এবং পূর্ণ বিশ্বাস রেখে রোগ-মুছীবতগ্রস্ত ব্যক্তির সাথে খাদ্য গ্রহণ করো।” সুবহানাল্লাহ! (নুখাবুল আফকার ফী তানক্বীহি মাবানিইল আখবার ফী শারহি মা‘আনিইল আছার লিবাদরিদ্দীন আইনী হানাফী ১৪/৯৪)

এধরনের রোগীর থেকে সর্তক থাকতে প্রোটেকশন ব্যবহার করার কোন আদেশ আছে কি?


অসুন্থ মানুষের সাথে কি ধারনের আচরন করতে বলা হয়েছে যার আমল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন করে দেখিয়েছেন,

একদা সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনার নিকট ছাক্বীফ গোত্র থেকে এক প্রতিনিধি দল আসলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি খাবার নিয়ে আসলেন, তখন গোত্রের সবাই নিকটবর্তী হলেন। আর এক ব্যক্তি কোষ্ঠরোগী দেখে দূরে সরে গেলো। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি কোষ্ঠরোগীর নিকটবর্তী হও। উক্ত ব্যক্তি কুষ্ঠরোগীর নিকটবর্তী হলো। তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি তাকে বললেন, খাওয়া-দাওয়া করো। অতঃপর সে খাওয়া-দাওয়া করলো। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার হাত কুষ্ঠরোগী যেখানে হাত রাখতো সেখানে রাখতেন। তারপর কুষ্ঠরোগী পাত্রের যেই স্থান থেকে (হাত দিয়ে লুকমা তুলে) খেতো সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিও হুবহু সেখান থেকেই খাবার গ্রহণ করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ ৫/১৪১ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৫, কানযুল উম্মাল ১০/৯৩-৯৪, জামি‘উল আহাদীছ ২৫/১৩২ ইত্যাদি)

তাওয়াক্কুলের নামে সেইফটি অবলম্বনকারীরা এ হাদীছ থেকে কি শিক্ষা নিবেন? সেইফটির নামে উক্ত রোগীকে আলাদা রাখা/ আলাদা পাত্র দেয়া/ হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করা কি তাদের যুক্তি অনুযায়ী যথযথ মনে হয় না? কিন্তু ইসলাম এ শিক্ষা কি দিয়েছে? না, প্রথমেই ইসলাম ছোঁয়চে রোগ রদ করেছে এরপর রোগীর সাথে কি আচরন করতে হবে সে শিক্ষাই দিয়েছে।

আরো বর্ণিত আছে, হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু এবং হযরত সালমান ফার্সী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনারা উভয়ে কুষ্ঠরোগীদের জন্য খাবার তৈরী করতেন এবং কুষ্ঠরোগীদের সাথে খাওয়া-দাওয়া করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (উমদাতুল ক্বারী ২১/২৪৭, শারহু ছহীহিল বুখারী লিইবনে বাত্তাল ৯/৪১০)

হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে, “হযরত ইকরামাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার শরীর ঘেঁষে এক কুষ্ঠরোগী অবস্থান করতে থাকলেন। তখন আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললাম, আপনি কুষ্ঠরোগীর সাথে লেগে আছেন? জবাবে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আপনি চলে যান। হতে পারে এই ব্যক্তি আমার এবং আপনার চেয়ে উত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪২ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৮)
কোন একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমকে তো সেফটির কথা বলে কোন ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
যারা সেইফটি ইকুইপমেন্টের কথা বলছেন তারা আসলে নিজেক নিজে ধোঁকা দিচ্ছেন। কারন আক্বীদা স্পষ্ট।  হযরত ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ বিষয়টা পরিষ্কার করে উনার কিতাবে বলেন,
অর্থ: ‘ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছুই নেই’ দএ হাদীছ শরীফের অর্থ হচ্ছে, কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না এবং কোন রোগী কোন সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারেনা। বরং মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় সবকিছু হয়। উনার ইচ্ছার বাইরে কোন কিছু হয় না।” (আল ইস্তিযকার ৮/৪২২; প্রকাশনা: দারু কুতুব আল ইলমিয়া, বৈরুত লেবানন)

 

মশা থেকে বাঁচার জন্য মশারী, যুদ্ধে আহত হওয়া থেকে হেফাজত থাকতে বর্ম ইত্যাদি ব্যবহার করা আর রোগ থেকে সতর্ক থাকার জন্য মাষ্ক, গ্লাভস ব্যবহার করার মধ্যে কি তাহলে কোন পার্থক্য নেই?

প্রতিটা বিষয়ের একটা স্বত্তাগত ধর্ম আল্লাহ পাক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। মশার ধর্ম সে আপনাকে কামড়াবেই, সাপের ধর্ম আপনাকে ছোবল দিবে, আগুনের ধর্ম হাত দিলে হাত পুড়িয়ে দিবে, যুদ্ধ করতে গেলে প্রতিপক্ষের আঘাতে আপনি আহত হতেও পারেন। একারনে এগুলো থেকে সতর্ক থাকার জন্য সেইফটি ব্যবস্থা গ্রহন যৌক্তিক। আর রোগের ধর্ম হচ্ছে তা সংক্রমণ করবে না। তাহলে বোঝা গেলো রোগের সাথে অন্য আর বিষয়গুলোকে জড়ানো চলবে না। আপনি সেইফটি ব্যবস্থা গ্রহন করলেও আপনার নছীবে রোগ থাকলে হবে না থাকলে হবে না।

তাওয়াক্কুল এর সাথে সেফটি ইকুইপমেন্ট এর কোরিলেশন তৈরী করার অর্থই হলো পরোক্ষভাবে ছোঁয়াচে রোগকে মেনে নেয়। আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি কেন সেফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করছেন আপনি উত্তর দিবেন, রোগ থেকে বাঁচার জন্য সর্তকতা অবলম্বন করতে। আপনাকে আবার জিজ্ঞাসা করা হলো. আপনি কি রোগের ছোঁয়াচে হওয়া  বিশ্বাস করেন? আপনি উত্তর দিবেন, না। তাহলে আপনি কেন সেফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করছেন? আপনার উত্তর, রোগ থেকে বেঁচে থাকতে।

যেখানে আপনি বলছেন রোগের সংক্রমন শক্তি নেই সেখানে আপনি তাহলে কি থেকে বাঁচতে সেফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করছেন? অর্থৎ মুখে আপনি ঠিকই বলছেন ছোঁয়াচে রোগ নেই কিন্তু অন্তরে অনিচ্ছা স্বত্তেও ছোঁয়াচে রোগের বিশ্বাস লালন করছেন আর সেটাকে হালাল করতে তাওয়াক্কুল এর সাথে সেফটি ইকুইপমেন্ট এর কোরিলেশন তৈরী করছেন।

এখন আবার আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, আপনি মশারী ব্যবহার করছেন কেন? উত্তর দিবেন, মশার কামড় থেকে বাঁচতে। আবার জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কি বিশ্বাস করেন মশা আপনাকে কামড় দিবে। আপনি উত্তরে কি ‘না’ বলবেন নাকি ‘হ্যাঁ” বলবেন? অবশ্যই হ্যাঁ বলবেন। কারন আপনি জানেন মশা অবশ্যই কামড় দেয়। ফ্যাক্ট এখানেই। মশা কামড় দেয় অপরদিকে রোগ ছোঁয়াচে হয় না। সূতরাং মশারীর সাথে রোগ থেকে বাঁচার জন্য সেফটি ইকুইপমেন্ট এর তুলনা চলে না।

এখানে হয়তো বলতে পারেন মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি হচ্ছে কেন? দেখেন এ যুক্তিও কিন্তু অচল। কারন একটা সিরিঞ্জে করে যদি কোন পয়েজন করো শরীরে পুশ করা হয় তাহলে সে আক্রন্ত হবে কিনা? মশার ব্যাপারটা অনেকটা এমনি। বিশেষ কিছু মশার শরীরের জীবানু রক্ত শোষন করার সময় রক্তে প্রবেশ করছে বিধায় ঐ মানুষটা আক্রন্ত হচ্ছে। বিষের সাথে তুলনা চলে এটার। যেমন সাপের কামড়ে বিষক্রীয়া হয়। এটার সাথে কিন্তু একজনের দেহ থেকে আপনার দেহে রোগ চলে আসতে পারে এমন চিন্তা করার কোন সুযোগই নেই। কারন  রোগের ছোঁয়াচে হওয়ার কোন সুযোগই নেই। তাই এই যুক্তি দেখিয়ে সেফটি ইকুইপমেন্ট পরিধান করে অন্তরে রোগ সংক্রমণের আশংঙ্খা পোষন করার দরকার নেই।

বরং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহ পাকের প্রতি ভরসা হবে এমন যে, আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফয়সালা “
ছোঁয়াচে বলে কোন রোগ নেই” সেটা বিনা দ্বিধায় মেনে অন্তরে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষন করতে হবে এবং সেটার আমলে বাস্তবয়নও করতে হবে। সেফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে আক্বীদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

আল্লাহ পাক সবাইকে সঠিক বিষয়টা বোঝার তৌফিক দান করুন। আমীন।


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন