হাফিযুল
হাদীছ শামসুদ্দীন ইবনে নাছিরুদ্দীন দিমাশকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার
‘মাওরিদুছ ছাবী ফী মাওলিদিল হাদী’ নামক কিতাবে উল্লেখ করেন,
قد
صح
ان
ابا لهب يخفف عنه عذاب النار فى مثل يوم الاثنين لاعتاقه ثويبة سرورا بميلاد النبى صلى الله عليه وسلم ثم انشد:
اذا
كان
هذا
كافرا جاء ذمه +
وتبت
يداه
فى
الجحيم مخلدا
اتى
انه
فى
يوم
الاثنين دائما +
يخفف
عنه
للسرور باحمدا
فما
الظن
بالعبد الذى طول عمره +
باحمد مسرورا ومات موحدا.
অর্থ: “ছহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, আবু
লাহাবের জন্যে জাহান্নামের শাস্তিকে প্রতি ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা পবিত্র সোমবার
শরীফ-এ লাঘব করে দেয়া হয়, যেহেতু সে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণের সংবাদে আনন্দিত
হয়ে তার বাঁদী হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে আযাদ করে দিয়েছে।
অতঃপর তিনি পবিত্র ক্বাছীদা শরীফ বর্ণনা
করেন, যখন এমন এক কাফির যার জন্যে ‘তাব্বাত ইয়াদাহু’ বলে মহান আল্লাহ তায়ালা তার
তিরস্কারের জন্যে পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে জাহান্নামের চিরস্থায়ী শাস্তির কথা
জানিয়ে দিয়েছেন। অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, আহমদ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনে খুশি প্রকাশ করার জন্যে সর্বদা ইয়াওমুল
ইছনাইনিল আযীম বা পবিত্র সোমবার শরীফ-এ তার শাস্তিকে লাঘব করে দেয়া হয়। সুতরাং কি
ধারণা করা যেতে পার ঐ বান্দার সম্পর্কে, যে পূর্ণ জীবনটা নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনে খুশি প্রকাশ
করেছে এবং তাওহীদের উপর মৃত্যুবরণ করেছে?” (আল হাবী লিল ফতওয়া ১ঃ১৯৭)
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ শায়েখ
মুহাম্মদ বদরুদ্দীন আল মাগরিবীর সুযোগ্য শাগরিদ আলিমে ফাযিল শায়েখ মাহমুদ আল
আত্তার সাহেবের ১৩৩০ হিজরীতে লিখিত ‘ইস্তেহবাবুল ক্বিয়াম ইন্দা যিকরে বিলাদাতিহি’
নামক পুস্তকে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় বিস্তারিতভাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার বিপরীত
সকল অভিযোগের দলীলভিত্তিক জবাব প্রদান করেছেন। তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার পবিত্র
ক্বিয়াম শরীফ সম্পর্কে যথাযথ প্রামাণ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ এবং পবিত্র কুরআন শরীফ
উনার উদ্ধৃতি পেশ করে অতঃপর লিখেছেন,
فاذا
ثبت
ان
القيام مطلوب للتعظيم والاكرام لاهل الشرف فكيف يمنع منه عند ذكر مولده صلى الله عليه وسلم تعظيما له بل انه اولى واحق من القيام لاحد امته وقد نص غير واحد من الفقهاء الائمة الاربعة ومن المحدثين واهل السير على استحبابه.
অর্থ:- “যখন প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ
উনার উদ্দেশ্য হলো সম্মান প্রদর্শন এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্বের প্রতি তা’যীম
প্রদর্শন করা, তখন কি করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ আলোচনার সময় উনার সম্মানে দাঁড়িয়ে
যাওয়া বা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করাকে নিষেধ করা হবে? বরং উনার কোনো উম্মতকে দাঁড়িয়ে
সম্মান প্রদর্শনের তুলনায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যে দাঁড়িয়ে যাওয়া অত্যধিক যুক্তিযুক্ত ও উত্তম। এভাবে
দাঁড়ানো বা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করাকে মুস্তাহাব বলে চার মাযহাবের ইমামগণ,
মুহাদ্দিছীন এবং সীরাত বিশারদগণ এর সমর্থনে অভিমত বর্ণনা করেছেন।” (আল হাক্বাইক্ব
ফী ক্বিরআতে মাওলিদিন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি, পৃষ্ঠা ১২)
শায়েখ মাহমুদ আত্তার
দিমাশক্বীর ফতওয়া সম্পর্কে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মালিকী মাযহাবের মুফতী শায়েখ
আহমদ আল জাযায়িরী ছাহেবের বক্তব্য,
الحمد لله اوجب على جميع المسلمين تعظيم سيد المرسلين والصلاة والسلام على اشرف المخلوقات وعلى اله وصحبه والتابعين الباذلين ارواحهم واموالهم فى محبته سواء فى حياته اوبعد موته فاقول وعن باب مولاى لااحوال ان عمل مولد الشريف والقيام عند ذكر وضعه المنيف هو مما يدل على تعظيم جناب الرسول الكريم الذى هو بالمؤمنين رؤف رحيم وقد استحسن المؤمنون وعملوا به مدة قرون وقدورد بالسند الحسن ماراه المؤمنون حسنا فهو عند الله حسن هذا وما حرره مولانا محمود افندى العطارهو طريفة الاخيار واهل السنة الابرار وهو حرى بالقبول ولاينكره الا محروم ومخذول توقيع مع ختم.
অর্থ:- “সমস্ত প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ পাক উনার
জন্য, যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সম্মানকে সকল মুসলমানের প্রতি ওয়াজিব করে দিয়েছেন। পবিত্র দুরূদ শরীফ ও
পবিত্র সালাম শরীফ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সে মহান ব্যক্তিত্বের প্রতি এবং উনার পরিবার ও
অনুসারীদের প্রতি, যাঁরা উনাদের জান ও মালকে উনার দুনিয়ারী হায়াত মুবারক অথবা
পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পর অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন। আমি পবিত্র মীলাদ শরীফ এবং নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার সময় পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা সম্পর্কে বলতে চাই যে, যা
কিছু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
তা’যীম বা সম্মানার্থে আমল করা হচ্ছে এবং যুগের পর যুগ ইহা ভালো কাজ হিসাবে
মুসলমানগণ আমল করে আসছেন। বিশুদ্ধ হাসান হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে,
মুসলমানগণ যে কাজকে ভালো বলে গ্রহণ করে, সেটি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটও ভালো
হিসাবে গৃহীত হয়। অতএব, মাওলানা মাহমুদ আফিন্দী আত্তার ছাহেব যা লিখেছেন, সেটা হলো
মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয় বান্দাদের পথ এবং সঠিক আহলে সুন্নতের মতো যা
স্পষ্টভাবে গৃহীত হয়। একে অস্বীকার শুধু তারাই করবে যারা বঞ্চিত ও ভাগ্যাহত।
সীলমোহর যুক্ত দস্তখত করেছেন, আস সাইয়েদ আহমদ আল জাযায়িরী আল হুসাইনী আল মাদানী।”
শাম দেশের দারুল হাদীছ
মাদ্রাসার শায়খুল হাদীছ শায়েখ মুহম্মদ ইয়াহইয়া ইবনুস সাইয়্যিদ আহমদ অভিমত পেশ করতে
গিয়ে লিখেছেন,
اما
بعد
فان
قراة
المولد الشريف والقيام عند ذكر ولادته صلى الله عليه وسلم هو احسن ماسنه المسلمون فى سائر البلاد الاسلامية ومن احسن الحسن الذى راه المسلمون ومن احب ما استحسنوه واجمعوا عليه.
অর্থ: “অতঃপর নিঃসন্দেহে পবিত্র মীলাদ শরীফ এবং নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার সময় দাঁড়িয়ে যাওয়া বা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা ইহা অতি
উত্তম ও সুন্নত, যা মুসলমানগণ প্রবর্তন করেছেন। মুসলমানেরা যা প্রবর্তন করেন তার
চাইতে ভালো আর কি হতে পারে? কত প্রিয় কাজটি তারা প্রবর্তন করেছেন এবং ইহার উপর
মুসলমানদের ইজমা হয়েছে।”
পবিত্র
মদীনা শরীফ উনার হারামে পাক শরীফ উনার শিক্ষক শায়েখ ইয়াসীন আহমদ আল খিয়ারী অভিমত
পেশ করেন,
اعلم
ان
القيام عند ذكر الولادة الشريفة لم يكن فى الصدر الاول بقرب العهد بانوار الحبيب الاكرم صلى الله عليه وسلم لكثرة انوار القلوب وامتلائها بمحبة حبيب علام الغيوب ثم لما كثرت المعا صى الفتن واستطار شر المحن والاحن وقلت انوار القلوب وكثر صداها بانهملك فى محبة الدنيا وايثارها على العقبى اجمع علماء الامة المقتدى بهم بعد الائمة على الاكثار من ذكر سير النبى صلى الله عليه وسلم الشريفة والمداومة على قراة مناقبه المنيفة لانها تجدد الشوق والحبة له صلى الله عليه وسلم اذمن احب شيئا اكثر ذكره ومن اعظمها ذكر سيرة الولادةتى حصلت لنا السعادة واجمع من يعتدبهم على سن القيام عند ولادة بالخصوص لانه يدل صريحا على تعظيمه واحتر امه المطلوب المنصوص الدال على كمال الايمان والمعلن بحصول الايقان فقد ورد عن صاحب الشامة والعلامة من سن فى الاسلام سنة حسنة فله اجرها واجر من عمل بها الى يوم القيامة فما احسن هذه السنة عند احبابه وما اعظم هذه الطريقة المرضية لدى خطاب جنابه والله در من قال واجاد فى المقال : شعر
قيامى للحبيب على فرض + وترك الفرض ما هو مستقيم. الخ.
تحرير غاية شهر ربيع الاول سنة 1330 +
كتبه
الفقير الى مولاه يس احمد الخيارى
خادم
العلم والفقراء بحرم سيد الشفعاء عفى عنه +
صورة
المهر : يس احمد الخيارى.
অর্থ: “জেনে রাখুন! নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ
নিয়ে আলোচনার সময় দাঁড়িয়ে যাওয়া বা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করার তরতীব হযরত নবী পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রথম যুগে ছিলোনা;
যেহেতু তখন অন্তরাত্মাগুলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতের নূরে পরিপূর্ণ ছিল। অতঃপর যখন পাপকার্য,
ফিৎনা-ফাসাদ অত্যাধিকহারে বৃদ্ধি হয়ে গেল, মানুষের অন্তরে নূর কম হয়ে গেল এবং
দুনিয়ার মুহব্বত প্রবেশ করলো এবং আখিরাতের প্রতি লক্ষ্য কম হয়ে গেল, তখন আইম্মায়ে
আরবাআর পরের স্তরের সকল অনুসরণীয় উলামায়ে মুজতাহিদীন উনার ঐকমত্যে উপনীত হলেন যে-
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবন
চরিত পাঠ করা এবং স্থায়ী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সদা-সর্বদা অনুষ্ঠান করে আলোচনা
করা। যাতে করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার প্রতি শাওক্ব ও মুহব্বত বৃদ্ধি হবে। কারণ যে যাকে ভালোবাসে সে তার
আলোচনাকে ভালোবাসে। বস্তুতঃ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার আলোচনা করা কত যে মহান ও
মর্যাদাবান! নির্ভরশীল উলামাদের ঐকমত্যে বিশেষ করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার
সময় দাঁড়িয়ে যাওয়া বা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করার তরতীব প্রবর্তন করেন। কারণ ইহা
স্পষ্টভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার প্রতি তা’যীম প্রদর্শনের পরিচয় বহন করে, যা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার প্রত্যক্ষ দাবি।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত আছে যে,
“যারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার জন্যে ভালো পদ্ধতি প্রবর্তন করেন, উহার পরিবর্তে
ভালো প্রতিদান দেয়া হবে এবং এ পদ্ধতির উপর যারা ক্বিয়ামত পর্যন্ত আমল করবে তাদেরকেও
সমপরিমাণ প্রতিদান দেয়া হবে।”
সুতরাং এ পদ্ধতিটি নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতকারীদের নিকট
কত উত্তম এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ কত বড় মর্যাদাবান এ পদ্ধতি! মহান আল্লাহ উনার
কসম! কত সুন্দর করে কবি বলেছেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানে দাঁড়িয়ে যাওয়া আমার জন্যে ফরয। ফরয ত্যাগী সকল
পথই ভ্রান্ত, যা শুদ্ধ নয়।
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মুফতী
শায়েখ তাহির সুম্বুল ছাহেব উনার ফতওয়া:
ان
المولد الشريف محتوى على احاديث رسول الله صلى الله عليه وسلم من خصوص ابائه الامجاد واو صافه وولادته فكل مشتاق الى رؤيته يقينا ولاشك فى ذالك فحيث ان المسرة هى غذاء الروح فلم يكن فى ذكر سماء الولادة المذكورة الا القيام والشكر الله والتعظيم لنبيه صلى الله عليه وسلم فهو احق بالتعظيم لماورد من الامر حين رضى يهود قريظة بالتحكم باحدرؤ سائهم وهو سعدبن معاذ رضى الله تعالى عنه حين قدم للتحكم عليهم فقال عليه الصلاة والسلام قوموا لسيد كم فما كان ذالك فكيف من هو احق بالقيام بسماء ولادته التى بشرب بها جمع الكئنات مما خلق الله سبحانه وتعالى من مدر وحجر وشجر وغير ذالك فكيف يستطيع للانسان النسان الكامل من يكون خاليا من ان روحانيته صلى الله عليه وسلم شامة لجميع امته وبالخصوص وبالاخص عند ذكره الشريف فلاشك ولا ريب هبوط الرحمات واستجات الدعوات فى ذالك الوقت.
অর্থ:- “পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠানটি
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
অনেকগুলো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভিত্তিতেই হয়ে থাকে, বিশেষ করে উনার পবিত্র বংশ
মর্যাদা, উনার পবিত্র গুণাবলী এবং উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণের সময়ে সংঘটিত
ঘটনাসমূহের আলোচনার পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ। এতে কোনো সন্দেহ নাই যে, এ উপলক্ষে
খুশি প্রকাশ করাটা হলো রূহের খাদ্য। তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের আলোচনার সময় দাঁড়ানো ছাড়া কিভাবে মহান
আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মান
প্রদর্শিত হবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি তো হলেন সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী। যেহেতু পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত
হয়েছে, বনু কুরায়জার ইহুদীরা যখন তাদের মধ্য থেকে কারো একজনের বিচারকের বিচারে
রাজি হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল আর হযরত সা’দ ইবনে মুয়াজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাকে বিচারক ঠিক করা হয়েছিল। তিনি যখন বিচারের জন্যে এসেছিলেন, তখন নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে
নির্দেশ মুবারক করেছিলেন, ‘তোমাদের সরদারের সম্মানে দাঁড়িয়ে যাও।’ যদি তাই হয়, তবে
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার সময়ে দাঁড়ানো সর্বাধিক যুক্তিসঙ্গত। কারণ উনার আগমনের
সংবাদ পৃথিবীর পানিতে, স্থলে, গাছে, পাতায় সর্বত্র পৌঁছায়ে দেয়া হয়েছিল, উনার
চাইতে বেশি হক্বদার তো আর কেউ হতে পারে না। সুতরাং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রূহানীভাবে সকল উম্মতকে
শামিল রাখেন, বিশেষ করে বিশেষত্বের সাথে উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার
সময়ে। তাই কোনো সন্দেহ নাই যে, এ সময়ে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ রহমত নাযিল হয়ে
থাকে এবং দোয়া কবুল হয়ে থাকে।
পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার
হাকীম এবং সুন্নতে রসূল উনার খাদিম আবদে রব্বিহি আহমদ আল জিলানী ইবনুল মারহুম
সাইয়্যিদ মুহম্মদ আস্য়াদ আফিন্দী আল জিলানীর বক্তব্য :
(بعد الحمد والثناء وطول الكلام) اقول هى بدعة حسنة كما قال قرأة المولد الشريف بدعة حسنة ويرد على القيام مايرد على القرأة اذ ان القيام يقصد به اظهار التعظيم والاحترام والاعمال بالنبيت وتعظيمه صلى الله عليه وسلم من افضل الاعمال بالفعل والقول الخ.
অর্থ:- “(হামদ ও না’ত এবং কিছু কথার পর) আমি বলছি
যে, পবিত্র মীলাদ শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের কথা আলোচনার সময় দাঁড়িয়ে যাওয়া বিদয়াতে হাসানাহ (অর্থাৎ
মুস্তাহাব) যেমন করে বর্তমান তরতীবে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করাকে বিদয়াতে হাসানাহ
বলা হয়ে থাকে। পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ উনার প্রতি সে কথাই আসে, যে কথা পবিত্র মীলাদ
শরীফ উনার জন্যে আসে। পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা যেহেতু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মান বা তা’যীম প্রদর্শনের
উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে আর আমলসমূহ নির্ভর করে থাকে নিয়তের উপরে। নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তা’যীম করা সকল কওলী
এবং ফে’লী কাজসমূহের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাবান।”
ফতওয়াতে দস্তখত করেছেন, আবদে রাব্বী আহমদ জিলানী।
পবিত্র মদীনা মুনাওওয়ারা শরীফ
হতে ১৭ যিলহজ্জ ১৩২৯ হিজরীতে এই ফতওয়া লিখা হয়েছে। লিখেছেন উলামায়ে হারামাইন
শরীফাইনের প্রধান বিচারপতি মুফতী সাইয়্যিদ শাহ মুহম্মদ আব্দুল গফ্ফার আল কাদিরী আল
হানাফী আল বাজলুরী।
(بعد الحمد والثناء وطول الكلام) فان القيام عند ذكر ولادته صلى الله عليه وسلم استحسنه العلماء الاعلام وقدوة دين الاسلام لانه مشعر المحبة وتعظيمه صلى الله عليه وسلم فذكروا ان ذكر ولادته تحضر روحانيته صلى الله عليه وسلم فعند ذالك يجب التعظيم والقيام حيث ارسله الله رحمة للعالمين الخ.
অর্থ: “(পবিত্র হামদ ও না’ত
শরীফ উনার পর) পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার সময়
পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা ‘মুস্তাহসান’ বলে বিশিষ্ট উলামায়ে কিরাম এবং নেতৃস্থানীয়
ইমামগণ অভিমত প্রকাশ করেছেন। যেহেতু এসব কিছু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত ও সম্মান প্রদর্শনের
ইঙ্গিতবাহী কাজ। ইহাও বর্ণিত রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার আলোচনার সময়
রূহানীভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি উপস্থিত হয়ে থাকেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানে দাঁড়িয়ে যাওয়া ওয়াজিব। যেহেতু মহান আল্লাহ পাক
তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
সমস্ত আলমের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন।”
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার
বাসিন্দা মাওলানা সাইয়্যিদ আহমদ আল বারজিনজী (ওফাত ১৩৩৭ হিজরী) তিনি শাফিয়ী
মাযহাবের মুফতী। ১৩২৯ হিজরীতে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার বিরুদ্ধে লেখা একটি পুস্তকের
জবাব দিতে গিয়ে তিনি একটি কিতাব রচনা করেন। কিতাবটির নাম ‘কামালুত তাশক্বীফ ওয়াত
তাক্বওয়ীম’। সেই কিতাবে তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ এবং পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ সম্পর্কে
দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা করে পবিত্র মিলাদ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ
বিরোধীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন। তিনি সেখানে উল্লেখ করেছেন,
وبهذا علم ايضا ان ما اعتاده الناس عن القيام عند ذكر وضعه صلى الله عليه وسلم امر مستحسن عند علماء الدين على المعتمدى الذى يعول عليه.
অর্থ: “(পূর্বালোচনার পর) এতে জানা গেল যে,
লোকেরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার সময় যে দাঁড়িয়ে থাকেন বা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করে থাকেন,
সেটি একটি ‘মুস্তাহসান’ কাজ, যা দীন ইসলামের নির্ভরশীল উলামাদের নিকট গৃহীত
হয়েছে।”
শাম দেশস্থ আছ ছলাতের বিচারপতি এবং মুফতী
শায়েখ মুহম্মদ ছালিহ আর রাঈস আল হানাফী উনার ফাতওয়া। ১৩২৯ হিজরী ২৮ যিলক্বাদাহ
তারিখে এ ফতওয়া লিখা হয়। সেখানে তিনি সুদীর্ঘ আলোচনায় পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র
হাদীছ শরীফ ভিত্তিক দলীল প্রমাণ উপস্থাপন করে জোরালোভাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ ও
পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ উনাকে জায়িয প্রমাণ করেছেন, তিনি সে ফতওয়াতে সর্বশেষ ফায়ছালা
দিয়েছেন যে,
الحاصل ان قراة المولد الشريف والقيام عند ذكر وضعه كل منها بدعة حسنة كما علمت وماراه المسلمون حسنا فهو عند الله حسن ولا عبرة بما اجاب به هذ القائل بعد مانقلناه لك من هذه النصوص المعتبرة من اجتهادة المحققين وائمة الدين.
অর্থ: “মোটকথা হলো, পবিত্র
মীলাদ শরীফ পাঠ করা এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার কথা আলোচনার সময় দাঁড়িয়ে যাওয়া হলো
বিদয়াতে হাসানাহ অর্থাৎ মুস্তাহাব। যেমন করে আমরা জানতে পেরেছি যে, ‘মুসলমানগণ যে
কাজকে ভালো হিসাবে গ্রহণ করেন, সে কাজটি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটও ভালো হিসাবে
গৃহীত হয়ে থাকে।’ আমাদের নিকট এ নির্ভরযোগ্য বর্ণনা এবং আইম্মায়ে দ্বীনের পবিত্র
ইজতিহাদ কৃতবাণীসমূহ বর্ণনার পর ঐ সব বিরোধীদের কথা আর গ্রহণযোগ্য নয়।”
পবিত্র জুমাদাল ঊলা মাস উনার
১৭ তারিখ ১৩৩০ হিজরী সনে পবিত্র মদীনা শরীফ-এ হযরত আল্লামা মুহম্মদ বশীর ছাহেব এ
ফতওয়াটি লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি এতে বিষদভাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াম
শরীফ উনার পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা করে অবশেষে দৃঢ়তার সাথে পবিত্র মীলাদ শরীফ ও
পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ উনাকে শরীয়তসম্মত মুস্তাহসান বলে প্রমাণ করেছেন। বিস্তারিত
আলোচনার পর সর্বশেষে যে ফায়ছালা পেশ করেছেন তা হলো-
قدثبت مما ذكرناه من قول العلماء الكرام والمشائج العظام من اهل السنة والجماعة ان انعقاد مجلس الميلاد وكذا القيام عند ذكر الولادة الشريفة مستحبان ومندوبان ومشعران بمحبة النبى صلى الله عليه وسلم وتعظيمه صلى الله عليه وسلم وكذالك اطعام الطعام بعد ختم المولد الشريف وغير ذالك من البخورات وزينة المجلس بالفرش الطاهر وغيره كل ذالك امور مباحات وبانضمام النية الصالحة تصير من المستحبات لان الاعمال بالنيات.
অর্থ: “আহলুস্ সুন্নত ওয়াল
জামায়াতের উলামায়ে কিরাম এবং মাশায়েখে এজাম উনাদের বাণী থেকে উদ্ধৃত পূর্বালোচনার
দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠান করা এবং
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
বিলাদত শরীফ নিয়ে আলোচনার সময় দাঁড়িয়ে যাওয়া এ দুটিই মুস্তাহাব এবং মুস্তাহসান কাজ
হিসাবে গৃহীত। যেহেতু এ দুটি কাজই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত ও তা’যীমের প্রতি ইঙ্গিতবাহী।
এমনিভাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ শেষে খাদ্য পরিবেশন করা, সুগন্ধি ছড়ানো, পাক-ছাফ
বিছানা বিছায়ে মাহফিলকে সজ্জিত করা ইত্যাদি সব কিছু মুবাহ বিষয় হিসাবে ভালো নিয়তের
কারণে মুস্তাহ্সান বা মুস্তাহাব হবে।”
আল্লামা হযরত ইসমাইল হাক্কী
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “তাফসীরে রূহুল বয়ানে” “মুহাম্মদুর রসূলুল্লাহ” এ পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন,
ومن تعظيمه عمل المولد اذالم يكن فيه منكر قال الامام السيوطى قدس سره يستحب لنا الظهار الشكر لمولده عليه السلام.
অর্থ: “পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শনেরই
শামিল। তবে বর্জনীয় সবকিছু থেকে তা মুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। হযরত ইমাম সুয়ূতী
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেছেন, আমাদের জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন উপলক্ষ্যে শুকরিয়া আদায় করা
মুস্তাহাব।” (রুহুল বয়ান৫ম খ ৬৬১ পৃষ্ঠ )
তিনি
অন্যত্র উল্লেখ করেছেন
وقد استخرج له الحافظ ابن حجر اصلا من السنة وكذا الحافظ السيوطى وردا على انكارها فى قوله ان عمل المولد بدعة مذمومة.
অর্থ: “হযরত হাফিয ইবনে হাজর
রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত হাফিয ইমাম সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা পবিত্র
‘সুন্নাহ’ শরীফ উনাকেই পবিত্র মীলাদ উনার উৎস বলে প্রমাণ করেছেন এবং উনারা সে সব
ব্যক্তির দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন, যারা পবিত্র মীলাদ শরীফ উনাকে বিদয়াতে সাইয়্যাহ
বা বর্জনীয় বিদয়াত বলে আখ্যায়িত করে তাতে বাধা প্রদান করার অপচেষ্টায় লিপ্ত
হয়েছে।” (তাফসীরে রহুল বয়ান)
হযরত আল্লামা সাইয়্যিদ আহমদ যায়নুদ্ দাহলান
মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার প্রণীত কিতাব ‘আদ্ দুরারুস্ ছানিয়্যাহ’ উনার
মধ্যে উল্লেখ করেছেন,
ومن
تعظيمه صلى الله عليه وسلم الفرح بليل ولادته وقراة المولد والقيام عند ذكر ولادته صلى الله عليه وسلم.
অর্থ: “পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার রাতে খুশি
উদযাপন পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন বৃত্তান্ত বর্ণনা করার সময় পবিত্র
ক্বিয়াম শরীফ করা (দ-ায়মান হয়ে পবিত্র সালাম শরীফ পাঠ করা) নিঃসন্দেহে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি
সম্মান প্রদর্শনেরই শামিল।”
হযরত আল্লামা উছমান ইবনে হাসান মুহাদ্দিছে
দিমিয়াতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার রচিত ‘ইছবাতে ক্বিয়াম’ নামক কিতাবে উল্লেখ
করেন,
القيام عند ذكر ولادة سيد المرسلين صلى الله عليه وسلم امر لاشك فى استحبابه واستحسانه وندبه يحصل كفاعله من الثواب الاوفر الخير الاكبر لانه تعظيم النبى الكريم الذى اخرجنا الله به من ظلمات الكفر الى الايمان وخلصنا الله من نار الجهل الى جنات المعارف والايقان.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
মীলাদ শরীফ পাঠের সময় পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা এমনই একটা কাজ, যা নিঃসন্দেহে
মুস্তাহাব, উত্তম ও ভক্তিসহকারে যারা পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করে তাদের জন্য অসংখ্য
ছওয়াব এবং মহান করুণা লাভ অবধারিত। কেননা, এ পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ সম্মান
প্রদর্শনার্থে করা হয়। কার সম্মানার্থে? ঐ মহান নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, যিনি হলেন সর্বোন্নত
চরিত্রের অধিকারী, যাঁর বদৌলতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে কুফরের অন্ধকার থেকে
ঈমানরূপী আলোর দিকে ধাবিত করেছেন এবং উনাদেরই মাধ্যমে আমাদেরকে জাহান্নামরূপী
মূর্খতা থেকে মুক্তি দিয়ে মা’রিফাত বা মহান আল্লাহ পাক উনার পরিচিতি ও ইয়াক্বীন বা
অটল বিশ্বাসের জান্নাতে প্রবেশাধিকার দিয়েছেন।”
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন