রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬

আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে ঈদ পালন করতে হবে


হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন “আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত”। এ নিয়ামত পাওয়ার কারনে সৃষ্টিজগৎ খুশি। আর সে খুশিই হচ্ছে ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর এই নিয়ামতের স্মরন বা ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার কথা আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে একাধিকবার বলেছেন। মহান আল্লাহ পাক বলেন,
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ بَدَّلُوا نِعْمَتَ اللَّـهِ كُفْرًا وَأَحَلُّوا قَوْمَهُمْ دَارَ الْبَوَارِ ﴿٢٨﴾
তুমি কি তাদের কে দেখনি, যারা আল্লাহর নেয়ামতকে কুফরে পরিণত করেছে এবং স্ব-জাতিকে সম্মুখীন করেছে ধ্বংসের আলয়ে। (সূরা ইব্রাহিম ২৮)
উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে বুখারী শরীফে বর্ণিত হয়েছে, 
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ‏{‏الَّذِينَ بَدَّلُوا نِعْمَةَ اللَّهِ كُفْرًا‏}‏ قَالَ هُمْ وَاللَّهِ كُفَّارُ قُرَيْشٍ‏.‏ قَالَ عَمْرٌو هُمْ قُرَيْشٌ وَمُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم نِعْمَةُ اللَّهِ 
আয়াতে “যারা” বলতে মক্কার কুরাইশ কাফেরদেরকে বুঝানো হয়েছে আর نعمة الله দ্বারা হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বুঝানো হয়েছে (বুখারী – কিতাবুল মাগাযী: হাদীস ৩৯৭৭)
এই তাফসীর করেন স্বয়ং হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি। তাহলে আমরা জানতে পারলাম, আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত বলতে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই বুঝানো হয়।

মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে একাধিক স্থানে এই নিয়ামত সম্পর্কে বলেন,
وَمَن يُبَدِّلْ نِعْمَةَ اللَّـهِ مِن بَعْدِ مَا جَاءَتْهُ فَإِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ ﴿٢١١﴾
অর্থ: আর আল্লাহর নেয়ামত পৌছে যাওয়ার পর যদি কেউ সে নেয়ামতকে পরিবর্তিত করে দেয়, তবে আল্লাহর আযাব অতি কঠিন। (সূরা বাকারা ২১১)
وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّـهِ عَلَيْكُمْ وَمَا أَنزَلَ عَلَيْكُم
অর্থ আল্লাহ পাক উনার সে নিয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা তোমাদের উপর রয়েছে (বাকারা ২৩১)
وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّـهِ عَلَيْكُمْ
অর্থ: তোমরা তাঁর আল্লাহ পাক উনার নিয়ামতের কথা স্মরন করো (আল ইমরান ১০৩)
وَاذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّـهِ عَلَيْكُمْ وَمِيثَاقَهُ الَّذِي وَاثَقَكُم بِهِ إِذْ قُلْتُمْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖوَاتَّقُوا اللَّـهَ ۚ إِنَّ اللَّـهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
অর্থ: তোমরা আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ঐ অঙ্গীকারকেও যা তোমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন, যখন তোমরা বলেছিলেঃ আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ অন্তরের বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি খবর রাখেন। (সূরা মায়িদা ৭)

وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّـهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ اللَّـهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ ﴿١٨﴾
অর্থ: যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা নহল ১৮)
وَآتَاكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلْتُمُوهُ ۚ وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَتَ اللَّـهِ لَا تُحْصُوهَا ۗإِنَّ الْإِنسَانَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ
অর্থ: যে সকল বস্তু তোমরা চেয়েছ, তার প্রত্যেকটি থেকেই তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন। যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় মানুষ অত্যন্ত অন্যায়কারী, অকৃতজ্ঞ। (সূরা ইব্রাহিম ৩৪)

তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ালো হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত। আর আল্লাহ পাক বারবার বলেছেন, সে নিয়ামত তথা হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আলোচনা করতে, এবং এ নিয়ামত এতবড় নিয়ামত যে যা আলোচনা ছানা সিফত করে শেষ করা যাবে না। আর একমাত্র অন্যায়কারী ও অকৃতজ্ঞ মানুষই এই নিয়ামত সম্পর্কে বেখবর। আর সে কারনে তারা পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মান বোঝে না। বরং অস্বীকার করে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন