সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৬

যাদের অন্তরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত আছে তাদের পক্ষেই শুধুমাত্র পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করা সম্ভব


যাদের অন্তরে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত আছে তাদের পক্ষেই শুধুমাত্র পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ বা নবীজীর আগমন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা সম্ভব। আল্লাহ পাক বলেন, 
النَّبِيُّ أَوْلَىٰ بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ

অর্থ: হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের জীবন অপেক্ষা অধিক নিকটবর্তী (সূরা আহযাব ৬)
আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন,
“মদীনাবাসী ও পাশ্ববর্তী পল্লীবাসীদের উচিত নয় রসূলুল্লাহর সঙ্গ ত্যাগ করে পেছনে থেকে যাওয়া এবং রসূলের প্রাণ থেকে নিজেদের প্রাণকে অধিক প্রিয় মনে করা।” (সূরা তওবা ১২০)

হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
لا يؤمن احدكم حتي اكون احب اليه من والده ووالده والناس اجمعين وفي رواية من ماله و نفسه
অর্থ : তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার পিতা-মাতা, সন্তান সন্তুতি, এবং সমস্ত মানুষ অপেক্ষা বেশি মুহব্বত না করবে। অন্য বর্নায় এসেছে, তার ধন সম্পদ এবং জীবনের চাইতে বেশি মুহব্বত না করবে।” (দলীল- বুখারী শরীফ ১/৭-কিতাবুল ঈমান- হাদীস নম্বর ১৪ এবং ১৫)
হাদীস শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, 
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ قَالَ: " لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ "

নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন মানুষ মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষন পর্যন্ত নিজের পরিবার, মাল সম্পদ, সমস্ত মানুষ থেকে আমাকে বেশি মুহব্বত না করবে। (আবু ইয়ালা ৩৮৪২)
হাদীস শরীফে অারো বর্ণিত হয়েছে,

عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ نَفْسِهِ , وَتَكُونَ عِتْرَتِي أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ عِتْرَتِهِ , وَيَكُونَ أَهْلِي أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِهِ , وَتَكُونَ ذَاتِي أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ ذَاتِهِ "
অর্থ: কোনো বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার নিজের জান থেকে আমাকে বেশি মুহব্বত করতে না পারবে এবং আমার সম্মানিত বংশধরগণ উনাদেরকে তার নিজের বংশধর থেকে বেশি মুহব্বত না করবে। আর আমার সম্মানিত আত্মীয়-স্বজন উনাদেরকে তার আত্মীয়-স্বজন থেকে বেশি মুহব্বত না করবে। আমার সম্মানিত জাত মুবারক উনাকে তার নিজের জাত থেকে বেশি মুহব্বত না করবে।” (মু’জামুল আওসাত লিত তাবারান ৫৯৪০, মুজামুল কবীর ৬৩০০, শুয়াইবুল ঈমান ১৪১৮)
যারা সত্যিকার অর্থে এমনভাবে মুহব্বত করতে পারবে তাদের পক্ষেই ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা সম্ভব। তাদের অন্তরেই নবীজীকে পাওয়ার কারনে খুশির আমেজ কাজ করেবে। তাদের পক্ষেই নিয়ামত হিসাবে হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে সে নিয়মতকে স্মরন করা ও পালন করা সম্ভব হবে।
পবিত্র কালাম পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
اذكروا نعمة الله عليكم

অর্থাৎ “তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে, তোমরা সে নিয়ামতকে স্মরণ কর।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৩)
এখন মুহব্বতের কষ্ঠিপাথর দ্বারা নিজের অবস্থান যাচাই করে নিন। বিন্দুমাত্র মুহব্বত থাকলে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশের বিরোধীতা করা সম্ভব নয়।

বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৬

ইলমে গাইব নিয়ে এক সালাফীর সাথে কথোপকথন


ইলমে গাইব নিয়ে কথা বলায় এক সালাফী আমাকে বললো ইলমে গাইব জানা আল্লাহ পাকের শান। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাইব জানার দাবী করা নাকি শিরক। এর পর তার সাথে আমার কথপোকথনের চিত্রটা সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরা হলো।
আমি: ইলমে গাইব কাকে বলে? দুই একটা উদাহরন দিন।
সালাফী: যে বিষয় সমূহ ইন্দ্রিয়গ্রহ্য বা পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্বারা বোঝা যায় না তাই গায়েব।
আমি: উদাহরন ?
সালাফী: জান্নাত, জাহান্নাম, কবরের আজাব, ফিরিশতা, মায়ের পেটে সন্তান কি হবে, কোথায় মারা যাবে, পরকালীন পরিনতি ইত্যাদি।
আমি: তো, এই বিষয়গুলো কি আমাদের নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখেন নাই?
সালাফী: ইয়ে মানে... (চুপ)
আমি: নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতের স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। নিজে জান্নাত দেখেছেন। মুসলিম শরীফে এও বর্নণা আছে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার জান্নাতের বালাখানার বর্ণনাও দিয়েছেন। হাদীস শরীফে এক জায়গায় আছে নামাজের সময় নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে জান্নত জাহান্নাম সবই পেশ করা হলো। তিনি বলেন, আমার কাছে জান্নাত উপস্থিত করা হয়েছিল। তাতে বিশালবৃক্ষরাজি দেখতে পেলাম যেগুলোর ছড়া ঝুঁকানো ছিল। (খারেজীরা যেই হাদীস শরীফ দ্বারা ছায়া মুবারক আছে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করে) এছাড়া জান্নাত দর্শনের আরো অনেক বিবরন বুখারী মুসলিম শরীফে আছে। কি বলেন ভাই কথা সত্য কিনা ?
সালাফী: হ্যাঁ, সত্য বটে। কিন্তু নাবীজী গায়েব জানেন এটা মানা শিরক... (নাউযুবিল্লাহ)
আমি: হা হা হা! আচ্ছা আপনি বলেছেন জাহান্নামও গায়েবের অর্ন্তভূক্ত। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি জাহান্নামের বর্ণনা দিয়েছেন? মুসতাদরিকে হাকেম-৫ম খন্ড ৬৪৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে আমার নিকট জাহান্নাম উপস্থিত করা হল। (খারেজীরা যেই হাদীস শরীফ দ্বারা ছায়া মুবারক আছে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করে)। জাহান্নাম কেমন , কি আযাব সব কিছুই নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাক্ষুস দেখেছেন এবং বর্ণনাও দিয়েছেন। কি বলেন ভাই কথা সত্য?
সালাফী: (আমতা আমতা করে) হ্যাঁ, সত্য। কিন্তু নবীজীর গায়েব মানা শিরক... (নাউযুবিল্লাহ)
আমি: হা হা হা! আপনি কবরের আজাবের কথা বলেছেন। কার কবরে কি আজাব হচ্ছে এটা নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন নাই? সিয়া সিত্তার কিতাবে আছে, এক লোক প্রস্রাব করে , প্রস্রাবের ছিটা ফোটা থেকে হিফাজত থাকতো না। এ কারনে জাহান্নামের আযাবে পতিত হয়। কি আযাব হচ্ছে সেটা নবীজী দেখেই তো বর্ননা করেছেন , নাকি ??
সালাফী: জ্বি! (মুখ শুকাইয়া গেছে)
আমি: ফিরিশতা যদি গায়েব হয় , নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরিশতা দেখেছেন কিনা?
সালাফী: এটা সত্য বটে। অসংখ্যবার দেখেছেন। কিন্তু...... (মুখ ভার)
আমি: মায়ের পেটে সন্তানের খবর নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন নাই? বায়হাক্বীর সহীহ সনদে আছে , হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মা’কে বলেছিলেন, আপনার গর্ভে পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি জন্মগ্রহণ করলে আমার কাছে নিয়ে আসবেন। শিশু জন্ম নিলে তাঁর মহান খিদমতে আনা হলো। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন ঐ শিশুর ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত দিলেন এবং মুখের লালা মুবারক শিশুর মুথে (তাহনীক) দিলেন। তারপর তার নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ্ এবং বললেন, এ শিশু আবু খোলাফা হবে। মায়ের পেটে সন্তান কি হবে এটা নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানেন কিনা ?
সালাফী: (কপালে ঘাম দেখা দিয়েছে) ... তাই তো দেখছি। ... ইয়ে মানে শিরক....
আমি: এখনো শিরিক ? কোথায় মারা যাবে , জান্নাতী না জাহান্নামী এটা জানাতো গায়েব। মুসলিম শরীফে বদর যুদ্ধের অধ্যায়ে বর্ণিত আছে বদর জিহাদের আগের দিন নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বদর প্রান্তে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন কোন কাফির কোথায় মারা যাবে। কোথায় তার লাশ পরে থাকবে। যুদ্ধের পরে দেখা গেলো তিনি যা বলেছেন তাই হয়েছে। যাদের নাম বলেছেন আর যে স্থান বলেছেন তা হুবুহু মিলে গেছে। বুখারী শরীফে একাধিক সনদে আছে এক যুদ্ধে এক লোক খুব বীরত্তের সাথে যুদ্ধ করছিলো। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সম্র্পকে বললেন সে জাহান্নামী হবে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো, সে যুদ্ধে আহত হয়েছে কষ্ট সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। তাহলে কোথায় মারা যাবে, কি পরিনাম হবে এসব নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতেন প্রমান পেলেন তো?
সালাফী: হুম, এসব আমিও পড়েছি। কিন্তু..... কিন্তু মুরুব্বীরা যে আমাদের শিখাইলো নবীজীর গাইব মানা শিরক।
আমি: হা হা হা! আপনাদের দেখছি কুরআন হাদীসের চাইতে মুরুব্বী প্রীতিই বেশি।
সালীফ: (সম্ভবত শেষ অস্ত্র ছাড়লো) ইয়ে কুরআন শরীফে আছে , কালামে পাকে ইরশাদ করেন,لايعلم من فى السموات والارض الغيب الا الله. অর্র্থঃ- “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইল্মে গইব নেই।” (সূরা নমল/৫৫) । তো আপনি কি বলবেন ??
আমি: দেখেন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, ان العزة لله جميعا. অথঃ- “সমস্ত ইজ্জত-সম্মান একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জন্য।”
আবার এও ইরশাদ হয়েছে, ولله العزة ولرسوله وللمؤمنين. অর্থঃ- “ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য এবং মু’মিনদের জন্য।” (সূরা মুনাফিকুন/৮)
তাহলে কি এখন প্রথম আয়াত দেখে আল্লাহ পাক ছাড়া আর কাউকে ইজ্জত সম্মান দিবেন না? এ আয়াত শরীফ গুলোর অর্থ এই যে, ইজ্জত সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। কিন্তু আল্লাহ্ পাক প্রদান করার কারণে মুসলমানগণ লাভ করেছেন, মান-সম্মানও অর্জন করেছেন। এভাবে ইলমে গায়েবের ব্যাপারেও তাই। যেটা কুরআন শরীফে আছে , মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ্ শরীফের ‘সূরা জিন’-এর ২৬, ২৭ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন, علم الغيب فلايظهر على غيبه احدا الا من ارتضى من رسول. অর্থঃ- “তিনি (আল্লাহ পাক) আলিমুল গইব, তাঁর ইলমে গইব তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না। অর্থাৎ রসূলগণকে তিনি ইলমে গইব দান করেছেন।” “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইল্মে গইব নেই।” (সূরা নমল/৫৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক-এরই রয়েছে। আর নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন মুত্তালা আলাল গইব। অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনাকে সকল গায়েবের জ্ঞান হাদীয়া করেছেন। বুঝতে পারলেন ?
সালাফী: (কিছুক্ষন চুপ করে থেকে).... হুম , মানে ইয়ে। হ্যাঁ! কিন্তু শিরক তো!
আমি: তাহলে ভাই কি আর করা। আপনাদের জন্য ঐ কথাটাই প্রযোজ্য, বিচার মানি কিন্তু তাল গাছ আমার। হা হা হা!

ইলমে গাইব নিয়ে এক সালাফীর সাথে কথোপকথন

ইলমে গাইব নিয়ে কথা বলায় এক সালাফী আমাকে বললো ইলমে গাইব জানা আল্লাহ পাকের শান। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাইব জানার দাবী করা নাকি শিরক। এর পর তার সাথে আমার কথপোকথনের চিত্রটা সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরা হলো।
আমি: ইলমে গাইব কাকে বলে? দুই একটা উদাহরন দিন।
সালাফী: যে বিষয় সমূহ ইন্দ্রিয়গ্রহ্য বা পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্বারা বোঝা যায় না তাই গায়েব।
আমি: উদাহরন ?
সালাফী: জান্নাত, জাহান্নাম, কবরের আজাব, ফিরিশতা, মায়ের পেটে সন্তান কি হবে, কোথায় মারা যাবে, পরকালীন পরিনতি ইত্যাদি।
আমি: তো, এই বিষয়গুলো কি আমাদের নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখেন নাই?
সালাফী: ইয়ে মানে... (চুপ)
আমি: নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতের স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। নিজে জান্নাত দেখেছেন। মুসলিম শরীফে এও বর্নণা আছে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার জান্নাতের বালাখানার বর্ণনাও দিয়েছেন। হাদীস শরীফে এক জায়গায় আছে নামাজের সময় নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে জান্নত জাহান্নাম সবই পেশ করা হলো। তিনি বলেন, আমার কাছে জান্নাত উপস্থিত করা হয়েছিল। তাতে বিশালবৃক্ষরাজি দেখতে পেলাম যেগুলোর ছড়া ঝুঁকানো ছিল। (খারেজীরা যেই হাদীস শরীফ দ্বারা ছায়া মুবারক আছে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করে) এছাড়া জান্নাত দর্শনের আরো অনেক বিবরন বুখারী মুসলিম শরীফে আছে। কি বলেন ভাই কথা সত্য কিনা ?
সালাফী: হ্যাঁ, সত্য বটে। কিন্তু নাবীজী গায়েব জানেন এটা মানা শিরক... (নাউযুবিল্লাহ)
আমি: হা হা হা! আচ্ছা আপনি বলেছেন জাহান্নামও গায়েবের অর্ন্তভূক্ত। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি জাহান্নামের বর্ণনা দিয়েছেন? মুসতাদরিকে হাকেম-৫ম খন্ড ৬৪৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে আমার নিকট জাহান্নাম উপস্থিত করা হল। (খারেজীরা যেই হাদীস শরীফ দ্বারা ছায়া মুবারক আছে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করে)। জাহান্নাম কেমন , কি আযাব সব কিছুই নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাক্ষুস দেখেছেন এবং বর্ণনাও দিয়েছেন। কি বলেন ভাই কথা সত্য?
সালাফী: (আমতা আমতা করে) হ্যাঁ, সত্য। কিন্তু নবীজীর গায়েব মানা শিরক... (নাউযুবিল্লাহ)
আমি: হা হা হা! আপনি কবরের আজাবের কথা বলেছেন। কার কবরে কি আজাব হচ্ছে এটা নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন নাই? সিয়া সিত্তার কিতাবে আছে, এক লোক প্রস্রাব করে , প্রস্রাবের ছিটা ফোটা থেকে হিফাজত থাকতো না। এ কারনে জাহান্নামের আযাবে পতিত হয়। কি আযাব হচ্ছে সেটা নবীজী দেখেই তো বর্ননা করেছেন , নাকি ??
সালাফী: জ্বি! (মুখ শুকাইয়া গেছে)
আমি: ফিরিশতা যদি গায়েব হয় , নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরিশতা দেখেছেন কিনা?
সালাফী: এটা সত্য বটে। অসংখ্যবার দেখেছেন। কিন্তু...... (মুখ ভার)
আমি: মায়ের পেটে সন্তানের খবর নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন নাই? বায়হাক্বীর সহীহ সনদে আছে , হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মা’কে বলেছিলেন, আপনার গর্ভে পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি জন্মগ্রহণ করলে আমার কাছে নিয়ে আসবেন। শিশু জন্ম নিলে তাঁর মহান খিদমতে আনা হলো। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন ঐ শিশুর ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত দিলেন এবং মুখের লালা মুবারক শিশুর মুথে (তাহনীক) দিলেন। তারপর তার নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ্ এবং বললেন, এ শিশু আবু খোলাফা হবে। মায়ের পেটে সন্তান কি হবে এটা নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানেন কিনা ?
সালাফী: (কপালে ঘাম দেখা দিয়েছে) ... তাই তো দেখছি। ... ইয়ে মানে শিরক....
আমি: এখনো শিরিক ? কোথায় মারা যাবে , জান্নাতী না জাহান্নামী এটা জানাতো গায়েব। মুসলিম শরীফে বদর যুদ্ধের অধ্যায়ে বর্ণিত আছে বদর জিহাদের আগের দিন নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বদর প্রান্তে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন কোন কাফির কোথায় মারা যাবে। কোথায় তার লাশ পরে থাকবে। যুদ্ধের পরে দেখা গেলো তিনি যা বলেছেন তাই হয়েছে। যাদের নাম বলেছেন আর যে স্থান বলেছেন তা হুবুহু মিলে গেছে। বুখারী শরীফে একাধিক সনদে আছে এক যুদ্ধে এক লোক খুব বীরত্তের সাথে যুদ্ধ করছিলো। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সম্র্পকে বললেন সে জাহান্নামী হবে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো, সে যুদ্ধে আহত হয়েছে কষ্ট সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। তাহলে কোথায় মারা যাবে, কি পরিনাম হবে এসব নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতেন প্রমান পেলেন তো?
সালাফী: হুম, এসব আমিও পড়েছি। কিন্তু..... কিন্তু মুরুব্বীরা যে আমাদের শিখাইলো নবীজীর গাইব মানা শিরক।
আমি: হা হা হা! আপনাদের দেখছি কুরআন হাদীসের চাইতে মুরুব্বী প্রীতিই বেশি।
সালীফ: (সম্ভবত শেষ অস্ত্র ছাড়লো) ইয়ে কুরআন শরীফে আছে , কালামে পাকে ইরশাদ করেন,لايعلم من فى السموات والارض الغيب الا الله. অর্র্থঃ- “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইল্মে গইব নেই।” (সূরা নমল/৫৫) । তো আপনি কি বলবেন ??
আমি: দেখেন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, ان العزة لله جميعا. অথঃ- “সমস্ত ইজ্জত-সম্মান একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জন্য।”
আবার এও ইরশাদ হয়েছে, ولله العزة ولرسوله وللمؤمنين. অর্থঃ- “ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য এবং মু’মিনদের জন্য।” (সূরা মুনাফিকুন/৮)
তাহলে কি এখন প্রথম আয়াত দেখে আল্লাহ পাক ছাড়া আর কাউকে ইজ্জত সম্মান দিবেন না? এ আয়াত শরীফ গুলোর অর্থ এই যে, ইজ্জত সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। কিন্তু আল্লাহ্ পাক প্রদান করার কারণে মুসলমানগণ লাভ করেছেন, মান-সম্মানও অর্জন করেছেন। এভাবে ইলমে গায়েবের ব্যাপারেও তাই। যেটা কুরআন শরীফে আছে , মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ্ শরীফের ‘সূরা জিন’-এর ২৬, ২৭ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন, علم الغيب فلايظهر على غيبه احدا الا من ارتضى من رسول. অর্থঃ- “তিনি (আল্লাহ পাক) আলিমুল গইব, তাঁর ইলমে গইব তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না। অর্থাৎ রসূলগণকে তিনি ইলমে গইব দান করেছেন।” “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইল্মে গইব নেই।” (সূরা নমল/৫৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক-এরই রয়েছে। আর নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন মুত্তালা আলাল গইব। অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনাকে সকল গায়েবের জ্ঞান হাদীয়া করেছেন। বুঝতে পারলেন ?
সালাফী: (কিছুক্ষন চুপ করে থেকে).... হুম , মানে ইয়ে। হ্যাঁ! কিন্তু শিরক তো!
আমি: তাহলে ভাই কি আর করা। আপনাদের জন্য ঐ কথাটাই প্রযোজ্য, বিচার মানি কিন্তু তাল গাছ আমার। হা হা হা!

মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬

বেহেশতী জেওর কিতাবে দেওবন্দী থানবী প্রতি সপ্তাহে মীলাদ মাফফিল করতে বলেছে

আজকে আপনাদের মীলাদ শরীফের এমন এক দলীল দেখাবো যে অনেকে হয়তো অবাকই হয়ে যাবেন। বিশেষ করে দেওবন্দী কওমী গ্রুপের লোক যারা তারা এই দলীল দেখার পরও মীলাদ শরীফের বিরোধীতা কিভাবে করে সেটাও দেখার মত একটা বিষয় হবে।
তো আসুন দেখা যাক দেওবন্দীদের অন্যতম মুরুব্বী আশরাফ আলী থানবীর বেহেশতী জেওর এর ৬ষ্ঠ খন্ডের “সীরাতে পাক” অধ্যায় থেকে বিষয়টা তুলে ধরা যাক:
“রসূলের জীবনী আলোচনার মজলিসকে কেহ সীরাতে পাকের মজলিস বলে।কেহ মওলুদ শরীফ বয়ানের মাহফিল বলে, কেহ মাহফিলে মীলাদ বলে। আসল উদ্দেশ্য একই ভাষা ভিন্ন। ইহা অত্যান্ত জরুরী।  মুসলমানদের ঘরে ঘরে এবং দোকানে দোকানে শুধু বৎসরে এক আধবার নয়, শুধু রবীউল আউয়ালের চাঁদে নয়, মাসে মাসে , সপ্তাহে সপ্তাহে এই পবিত্র মাহফিলে মীলাদের অনুষ্ঠান হওয়া বাঞ্ছনিয়।
কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় সমাজে অজ্ঞতা এবং মূর্খতা ক্রমশঃ বাড়িয়া চলিয়াছে। মাহফিলে মীলাদ সমন্ধে বড় বাড়াবাড়ি এবং ঝগড়া বির্তক হইতেছে। ঝগড়া ফ্যাসাদের বির্তকের বাড়াবাড়ি ত্যাগ পূর্বক এই পবিত্র মাহফিলের অনুষ্ঠার সর্বত্র হওয়া দরকার। ………………………………………. সীরাতে পাকের মজলিস বা মাহফিলে মীলাদ নাম দিয়া অনুষ্ঠান করিলে তাহা বিদয়াত হইবে- কখনো নহে।”
[দলীলঃ বেহেশতী জেওর। লেখক- আশরাফ আলী থানবী। অনুবাদক- আশরাফ আলী থানবীর খলীফা শামসুল হক ফরীদপুরী। ভলিউম -২, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা ২২২, অধ্যায়- সীরাতে পাক। প্রকাশনা- এমদাদীয়া লাইব্রেরী ( দেওবন্দী কওমীদের) ]
বেহেশতী জেওরের প্রথম পৃষ্ঠা

বেহেশতী জেওরের প্রকাশনা তথ্য

৬ষ্ঠ খন্ডের সীরাত পাক অধ্যায়

মীলাদ শরীফ সংশ্লিষ্ট আলোচনা

উক্ত বিষয়ের সাথে সুন্নীরাও একমত। অথচ বর্তমান দেওবন্দী কওমীরা তাদের মুরুব্বীর আর্দশ থেকে কতটা বিচ্যুত হয়ে পরেছে। মাহফিলে মীলাদকে থানবী ও ফরিদপুরী অত্যান্ত জরুরী বলে উল্লেখ করেছে, অথচ কওমী দেওবন্দীরা এটা বিদয়াত শিরিক বলে। মীলাদ মাহফিল প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে করা আবশ্যক বলে মুরুব্বীরা ঘোষনা দিয়ে গেছে অথচ বর্তমান কওমীরা মীলদের নামই শুনতে পারে না। শুধু তাই নয় থানবী ও ফরিদপুরী এটাও বলে গেছে , অজ্ঞতা এবং মূর্খতা বশত কিছু লোক মীলাদ শরীফ নিয়ে ঝগড়া বির্তক সৃষ্টি করছে, অর্থাৎ বর্তমান কওমী ওহাবীরা । থানবী ও ফরিদপুরী এই ঝগড়া বির্তক ত্যাগ করে পবিত্র মীলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠার সর্বত্র জারি করা দরকার বলেও রায় দিয়ে গেছে।
এখন বলুন এমন স্পষ্ট দলীল থাকার পরও কি করে মীলাদ শরীফের বিরোধীতা করে দেওবন্দী কওমীরা? (বেহেশতী জেওর ডাউনলোড লিংক)

সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ বা সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিষয়ে একটু তাত্ত্বিক বিশ্লেষন

মহান আল্লাহ পাক বলেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলে দিন, আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম।” (পবিত্র সূরা ইউনূছ আলাইহিস সালাম : আয়াত শরীফ ৫৮)
আমরা মু’মিন মুসলমান, নবীজীর আশেকগন এই আয়াত শরীফে “অনুগ্রহ ও রহমত’ বলতে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বুঝে থাকি। বাতিল ফির্কা তখন দলীল দেয় অনেক মুফাসসিরতো এই আয়াতে “অনুগ্রহ ও রহমত” বলতে ১) কুরআন শরীফ ২) ইসলাম ৩) ইলিম ৪) হেদায়েত ৫) নেক আমল ইত্যাদি বুঝিয়েছেন (যদিও শক্ত দলীল দ্বারা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বুঝানো হয়েছে)
হ্যাঁ, ভালো কথা। কোন সমস্যা নাই। এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, যদি অনুগ্রহ ও রহমত এর অর্থ কুরআন শরীফ ধরা হয় তবে কুরআন শরীফ পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করতে হবে। কারন কুরআন শরীফ আল্লাহ পাকের নিয়ামত।
যদি ইসলাম, ইলিম, হেদায়েত, নেক আমল ধরা হয় তবে অর্থ হচ্ছে এই সকল নিয়ামত পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করতে হবে। অর্থাৎ নিয়ামত পাওয়ার জন্য খুশি প্রকাশ করতে হবে এই কনসেপ্টে আপনিও একমত হলেন।
এবার পয়েন্টে আসেন, যিনি রহমাতুল্লীল আ’লামীন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে না পেতেন তবে কি আপনি কুরআন শরীফ পেতেন?
রহমাতুল্লীল আ’লামীন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে না পেতেন তবে কি ইসলাম পেতেন? ইলিম পেতেন? হেদায়েত পেতেন? নেক আমল পেতেন?
এসকল নেক আমল, নেক আমল হিসাবে প্রকাশ হয়েছে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের ফলে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, সবচাইতে বড় এবং মূল নিয়ামত হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সবচাইতে বড় অনুগ্রহ হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। আর তিনিতো সমগ্র আলমের রহমত (সূরা আম্বিয়া ১০৭)
মোটকথা হচ্ছে যদি আমরা হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করি তাহলে এই খুশি প্রকাশের মাধ্যমে কুরআন শরীফ ,ইসলাম, ইলিম, হেদায়েত, নেক আমল সবকিছুর জন্য শুকরিয়া ও খুশি প্রকাশ হয়ে যায়। কারন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন জামিউন নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ।
এখন যদি প্রশ্ন করি, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে আপনি কি খুশি?
মনে হয় না, মুসলমানদের মধ্যে এমন কোন গোত্র আছে সে বলবে যে খুশি নয়। নাউযুবিল্লাহ। অস্বীকার করার সুযোগই নেই। খুশি নয় বললে সে ঈমানদারই থাকতে পারবে না। কারন একমাত্র ইবলিশ ই নাখোশ ছিলো (বিদায়া ওয়ান নিহায়া)। নাউযুবিল্লাহ।
অর্থাৎ সবাই খুশি। তাহলে এই খুশি প্রকাশের কথা স্বীকার করতে এত গড়িমসি কেন? কেন এত দ্বীধা দন্দ? কেন এ্ত বির্তক?
যদি মু’মিন মুসলমান হন তবেতো আপত্তি করার সুযোগ নেই। তাই আসুন সবাই এক যোগে অন্তরের অন্তস্থল থেকে বলুন, আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম। (পবিত্র সূরা ইউনূছ আলাইহিস সালাম : আয়াত শরীফ ৫৮)

রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬

হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করা আল্লাহ পাকের আদেশ

হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন আল্লাহ পাক উনার রহমত। আর উনাকে পাওয়ার কারনে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা আল্লাহ পাকের আদেশ।
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি আপনাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি। (সূরা আম্বিয়া ১০৭)
সমগ্র জগতে রহমত হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনাকে রহমত হিসাবে প্রেরন করা হয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
ثُمَّ تَوَلَّيْتُم مِّن بَعْدِ ذَٰلِكَ ۖ فَلَوْلَا فَضْلُ اللَّـهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَكُنتُم مِّنَ الْخَاسِرِينَ ﴿٦٤﴾তারপরেও তোমরা তা থেকে ফিরে গেছ। কাজেই আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত যদি তোমাদের উপর না থাকত, তবে অবশ্যই তোমরা ধবংস হয়ে যেতে। (সূরা বাক্বারা শরীফ ৬৪ ) 
এই আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে দেওবন্দীদের অন্যতম মুরুব্বী পাকিস্তানের মুফতে শফী তার “মারেফুল কুরআন” তাফসীরে লিখেছে “আর হাদীস শরীফ উনার ভিত্তিতে যেহেতু আযাব অবর্তীন না হওয়াটা যেহেতু মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকত। কাজেই কোন কোন তাফসীর কারক মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আর্বিভাবকেই আল্লাহ পাক উনার রহমত ও করুনা বলে বিশ্লেষন করেছেন।” (তাফসীরে মারেফুল কুরআন : সূরা বাক্করা শরীফ উনার ৬৪ নং আয়াত শরীফ উনার তাফসীর) 
বর্তমান সময়ে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ বা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরোধীতাকারীদের অন্যতম মুরুব্বী মুফতে শফীর তাফসীর থেকেই দেখতে পাওয়া গেলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমনকে রহমত ও অনুগ্রহ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক সেই বিষয়টা স্পষ্ট করে বলে দিলেন,
قُلْ بِفَضْلِ اللَّـهِ وَبِرَথিحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ ﴿٥٨﴾
হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলে দিন, আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত তথা নূরে মুজাসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম। (পবিত্র সূরা ইউনূছ আলাইহিস সালাম : আয়াত শরীফ ৫৮)
উক্ত আয়াত শরীফ এর “রহমত” শব্দের তাফসীরে পৃথিবী বিখ্যাত সব তাফসীরের কিতাবে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথাই বলা হয়েছে। 
উক্ত আয়াত শরীফে তাফসিরে বিখ্যাত মুফাসসির, সমগ্র মাদ্রাসায় যাঁর তাফসীর পড়ানো হয়, হাফিযে হাদীস, আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন–
عن ابن عباس رضي الله تعال عنهما قال في الاية فضل الله العلم و رحمته محمد صلي الله عليه و سلم قال الله تعالي وما ارسلناك الا رحمة للعلمين
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, এ আয়াত শরীফের তাফসিরে এখানে আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ বলতে ” ইলিম” বুঝানো হয়েছে। আর রহমত দ্বারা বুঝানো হয়েছে ” হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” উনাকে। যেমন, আল্লাহ পাক বলেন, আমিতো আপনাকে তামাম আলমের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি।” (দলীল- তাফসীরে দূররুল মানছুর – ১০ নং সূরা – ১১ পারা- সূরা ইউনূছ ৫৮ আয়াত, তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী, তাফসীরে কবীর)
উক্ত আয়াতের তাফসীরে ” রহমত”মানে কিন্তু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থ দাড়াচ্ছে, আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ এবং রহমত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের কারনে খুশি বা ঈদ পালন করো।
উপরোক্ত সূরা আম্বিয়া ১০৭ নং আয়াত শরীফ ও সূরা বাক্বারা ৬৪ নং আয়াত শরীফ থেকে আমরা জানতে পারলাম “রহমত” হচ্ছেন স্বয়ং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
উছুলে তাফসীরে তাফসীর করার কয়েকটা প্রকারের কথা উল্লেখ করা আছে। প্রথমত, আয়াত শরীফ দিয়ে আয়াত শরীফের তাফসীর। দ্বিতীয়ত, হাদীস শরীফ দ্বারা আয়াত শরীফের তাফসীর। তৃতীয়ত, হযরত সাহাবায়ে কিরাম উনাদের ব্যাখা দ্বারা আয়াত শরীফ এর তাফসীর। চর্তুথত, ইমাম মুস্তাহিদ উনাদের ব্যাখা দ্বারা আয়াত শরীফ এর তাফসীর। আসুন এবার আমরা পবিত্র সূরা ইউনুছ এর ৫৮ নম্বর আয়াত শরীফ এর তাফসীর এই চার প্রক্রিয়ায় দেখবো।
আল্লাহ পাক বলেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলে দিন, আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম। (পবিত্র সূরা ইউনূছ আলাইহিস সালাম : আয়াত শরীফ ৫৮)
এই আয়াত শরীফে “রহমত” কে এইটা জানতে পারলেই ঈদে মীলাদুন্নবী পালনের বিষয়টা পানির মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। আসুন তাফসীর গুলো দেখা যাক-
আয়াত শরীফ দ্বারা তাফসীর:
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি আপনাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি। (সূরা আম্বিয়া ১০৭)
এই আয়াত দ্বারা আল্লাহ পাক রহমত এর সজ্ঞা দিয়ে দিলেন। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন আল্লাহর রহমত। সূতরাং রহমত পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করা কার আদেশ ভেবে দেখেন।
হাদীস শরীফ দ্বারা আয়াত শরীফের তাফসীর:
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারত করেন,
وعن أبي أمامة قال : قال النبي صلى الله عليه وسلم إن الله تعالى بعثني رحمة للعالمين
অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক আমাকে তামাম আলমের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন (তাবরানী শরীফ, মুসনাদে আহমদ, মিরকাত শরীফ, দালায়েলুন নবুওয়াত লি আবু নুয়াইম ১)
হাদীস শরীফ দ্বারা সূরা ইউনূছ এর ৫৮ আয়াত এর ব্যাখা পাওয়া গেলো। স্বয়ং নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন , তিনিই হচ্ছেন আল্লাহ পাক উনার রহমত। সূতরাং নবীজীকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করতে হবে এটা হাদীস শরীফ এর ব্যাখা দ্বারা প্রমান হলো।
হযরত সাহাবায়ে কিরাম উনাদের ব্যাখা দ্বারা আয়াত শরীফ এর তাফসীর: সূরা ইউনূছ শরীফ এর ৫৮ নং আয়াত শরীফের তাফসীরে বিখ্যাত সাহাবী রঈসূল মুফাসসিরীন ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এ আয়াত শরীফের তাফসিরে এখানে আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ বলতে ” ইলিম” বুঝানো হয়েছে। আর রহমত দ্বারা বুঝানো হয়েছে ” হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” উনাকে। যেমন, আল্লাহ পাক বলেন, আমিতো আপনাকে তামাম আলমের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি।”(তাফসীরে দুররে মানছুর ১০ নং সূরা – ১১ পারা)
সূতরাং তাফসীরকারক দের মাথার তাজ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি সূরা ইউনূছ ৫৮ এর রহমত দ্বারা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বুঝানো হয়েছে।
ইমাম মুস্তাহিদ উনাদের ব্যাখা দ্বারা আয়াত শরীফ এর তাফসীর: হাফিজে হাদীস, মুজাদ্দিদে যামান, বিখ্যাত হযরত মুফাসসির জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি, তাজুল মানতেকীন ফখরুদ্দীন রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি, বিখ্যাত মুফাসসির আল্লাম আলুসী বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তাফসীরে বর্ণিত রহমত হচ্ছেন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । (দলীল- তাফসীরে দূররুল মানছুর – ১০ নং সূরা – ১১ পারা- সূরা ইউনূছ ৫৮ আয়াত, তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী, তাফসীরে কবীর)
উপরোক্ত চার প্রকার তাফসীর থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হলো, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলে দিন, আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাওয়ার কারনে খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম। (পবিত্র সূরা ইউনূছ আলাইহিস সালাম : আয়াত শরীফ ৫৮)

শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

মুসলমানদের জন্য সকল খেলাধুলা হারাম

মানুষের প্রবৃত্তি খেল তামাশায় মশগুল থাকতে চায়। নফস সাধারনত খেলাধূলার স্বাদ আস্বাদন করতে খুবই আগ্রহী। কিন্তু খেলা ধুলা যে ইসলোমে নিষিদ্ধ এবং এর মাধ্যমে মানুষ যে ক্রমান্বয়ে নফসের দাসত্ব বরন করছে তা নিজেও জানে না। খেলা ধুলা করে, দেখে দিন পার করে দিয়ে যখন তার হুস ফেরে তখন আর শুধরানোর কিছুই অবশিষ্ঠ থাকে না। তাই যেনে নেয়া দরকার খেলাধুলা সর্ম্পকে ইসলোমের হুকুম কি……..
১. সূরা যুখরুফে ৮৩ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
فَذَرْهُمْ يَخُوضُوا وَيلَْعَبُوا حَتَّى يُلاقُوا يوَْمَهُمُ الَّذِي يُوعَدُونَ
অর্থ: অতএব, তাদেরকে বাকচাতুরী ও ক্রীড়া-কৌতুক করতে দিন সেই দিবসের সাক্ষাত পর্যন্ত, যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়।”
২. সূরা আল-আনআমের ৯১ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
قُلِ اللّهُ ثُمَّ ذَرْهُمْ فِي خَوْضِهِمْ يلَْعَبُونَ
আপনি বলে দিন: আল্লাহ নাযিল করেছেন। অত:পর তাদেরকে তাদের ক্রীড়ামূলক বৃত্তিতে ব্যাপৃত থাকতে দিন।
৩. সূরা আরাফে ৯৮ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
أَوَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا ضُحىً وَهُمْ يَلْعَبُونَ

আর এই জনপদের অধিবাসীরা কি নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছে যে, তাদের উপর আমার আযাব দিনের বেলাতে এসে পড়বে অথচ তারা তখন থাকবে খেলাধুলায় মত্ত।
৪. সূরা আল-আম্বিয়া এর ২ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন,
مَا يَأْتِيهِمْ مِنْ ذِكْرٍ مِنْ رَﺑِّﻬِمْ مُحْدَثٍ إِلَّا اسْتَمَعُوهُ وَهُمْ يلَْعَبُونَ لاهِيَةً قلُُوبهُُمْ
তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে যখনই কোন নতুন উপদেশ আসে, তারা তা খেলার ছলে শ্রবণ করে।
৫. সূরা দুখানের ৯ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন,
بَلْ هُمْ فِي شَكٍّ يلَْعَبُونَ
এতদসত্ত্বেও এরা সন্দেহে পতিত হয়ে ক্রীড়া-কৌতুক করছে।
৬. সূরা তুরের ১২ নং আয়াতে রয়েছে,
فَوَيْلٌ يوَْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ الَّذِينَ هُمْ فِي خَوْضٍ يلَْعَبُونَ
সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে, যারা ক্রীড়াচছলে মিছেমিছি কথা বানায়।
৭. সূরা মায়েদার ৫৮ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন,
وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلاةِ اتَّخَذُوهَا هُزُواً وَلَعِب اً
আর যখন তোমরা নামাযের জন্যে আহবান কর, তখন তারা একে উপহাস ও খেলা বলে মনে করে। কারণ, তারা নিবোর্ধ।
৮. সূরা আল-আনআমের ৭০ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَعِباً وَلهَوْاً وَغَرَّتْهُمُ الحَْيَاةُ الدُّنْيَا وَذكَِّرْ بِهِ أَنْ تبُْسَلَ نفَْسٌ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لهَاَ مِنْ دُونِ
اللَّهِ وَلِي وَلاَ شَفِيعٌ
তাদেরকে পরিত্যাগ করুন, যারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে। কোরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিন, যাতে কেউ স্বীয় কর্মে এমন ভাবে গ্রেফতার না হয়ে যায় যে, আলাহ্ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী নেই।
৯. সূরা আল-আনআমের ৩২ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
وَمَا الحَْيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ لَعِبٌ وَلهَوٌْ وَلَلدَّارُ الآخِرَةُ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ يتََّقُونَ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস পরহেযগারদের জন্যে শ্রেষ্টতর। তোমরা কি বুঝ না ?
১০.সূরা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩৬ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّمَا الحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلهَوٌْ وَإِن تؤُْمِنُوا وَتَتَّقُوا يؤُْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلَا يَسْأَلْكُمْ أَمْوَالَكُمْ
পার্থিব জীবন তো কেবল খেলাধুলা, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও এবং সংযম অবলম্বন কর, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান দেবেন এবং তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চাইবেন না।
১১.সূরা আঙ্কাবুতের ৬৪ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে,
وَمَا هَذِهِ الحَْيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لهَوٌْ وَلَعِبٌ وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ لهَِيَ الحَْيَوَانُ لَوْ كَانُوا يعَْلَمُونَ
এই পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক বৈ তো কিছুই নয়। পরকালের গৃহই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত।
১২. সূরা জুমুআর ১১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
قُلْ ما عِنْدَ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التِّجَارَةِ وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
বলুন: আল্লাহ র কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।

এখানে উদ্দেশ্যহীন কাজ দ্বারা ঐকাজ উদ্দেশ্য যা হাদীস খেল-তামাশা ও অনর্থক কাজ (লাহু, লায়াব, ও লাগবুন) ইত্যাদি শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে। এখানে উক্ত তিনটি শব্দের শাব্দিক অর্থ বর্ণনা সঙ্গত মনে করছি।
লাহবুন এর সংজ্ঞায় লুগাতে বর্ণিত আছে,
اللهو: مَا يُشْغِلُ الإِنْسَانَ عَمَّا يعَْنِيْهِ و يُهِمه
অর্থাৎ প্রত্যেক ঐ জিনিসকে লাহবুন বলে, যা মানুষকে তার উদ্দিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থেকে গাফেল রাখে।

লা-বুন এর সংজ্ঞায় এসেছে,
اللَّعْبُ : لَعِبَ فُلاَنٌ إِذَا كَانَ فَعَله غَيْر قَاصِدٍ به قصدا صَحِيحًا
অর্থাৎ লা’বুন প্রত্যেক ঐ কাজকে বলে, যা সঠিক উদ্দেশ্য ব্যতিত সম্পাদন করা হয়।
লাগবুন অর্থ হচ্ছে,
اللغَّْوُ : ھُوَ كُلُّ سِقْطٍ مِنْ قَوْلٍ أوَْ فِعْلٍ فَیَدْخُلُ فِیْھِ الغِنَاءُ وَ اللھَّْوُ وَ غَیْر ذَلك مِمَّا قَارَبَھُ
অর্থাৎ লাগবুন বলা হয়, প্রত্যেক অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত কথা ও কাজকে। এর মাঝে গান-বাদ্য ও খেলতামাশা অন্তর্ভূক্ত।

হাদীস শরীফে উল্লেক আছে,
مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يعَْنِيهِ
“মানুষের আদর্শ ইসলামের চিহ্ন হলো, অর্থহীন কাজকে পরিত্যাগ করা। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ২৩১৭, সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস নং ৩৯৭৬। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ১৭৩৭)

তিরমিযি, ইবনে মাজা, মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ ইবনে খোযাইমায় বর্ণিত আছে,
ن من الحق 􀄔 كُلُّ شيْءيلَْهُوْ بِه الرَّجُل بَاطل إِلاَّ رَمْيَةٌ بِقَوْسٍ وَتَاْدِيْبُهُ فَرَسَه وَ مُلَاعَبَتُه إٍمْرأتَه فَإ
মানুষের প্রত্যেক খেলা-ধুলা বাতিল, তবে তীর নিক্ষেপ, ঘোড়া দৌড়ান এবং নিজ স্ত্রীর সাথে বিনোদন ব্যতীত। কেননা এ তিন প্রকার উপকারী।”


সূতরাং স্পষ্ট হাদীস শরীফ থেকেই দেখা যাচ্ছে সকল খেলাধুলাই বাতিল। আর যে তিন প্রকার উপকারী বলা হয়েছে তা মূলত খেলাধুলা নয়। বরং সেটা আলাদাভাবে নিদৃষ্ট করে শরীরচর্চার জন্য বলা হয়েছে।
কানযুল উম্মালে উক্ত হাদীসটি এভাবে বর্ণিত হয়েছে,
مَا مِنْ شَيْء تَحْضره الملائكة من اللهو إلا ثلاثة الرجل مع إمرأته و إجراء الخيل و النضال
“তিনটি ব্যতীত অন্য কোন খেলায় রহমতের ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় না।
১. স্ত্রীর সাথে বিনোদন। ২. ঘোড়া দৌড়ান। ৩. তীরান্দাযি।”

সূতরাং অন্য যেকোন খেলায় রহমত থাকে না। অর্থাৎ যেখানে রহমত থাকে না সেখানে গজব নাযিল হয়। ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন সহ যত খেলা আছে সবখানেই গযব নাজিল হয় প্রমান হলো।
কানযুল উম্মালের অপর এক বর্ণনায় এবং জামে সগীরের এক বর্ণনায় তিনের পরিবর্তে চারটির কথা এসেছে,
كل شيء ليس من ذكر الله لهو و لعب إلا أن يكون أربعة: ملاعبة الرجل إمرأته و تَاْديب الرجل فرسه و مشي الرجل بين الغرضين و تعليم الرجل السباحة
অর্থ: “আল্লাহ তায়ালা যিকির সম্পর্কিত নয় এমন প্রত্যেকটি জিনিস খেল-তামাশার অন্তর্ভূক্ত। তবে চারটি জিনিস ব্যতীত, ১. স্ত্রীর সাথে বিনোদন ও খেলা-ধুলা। ২. ঘোড়া দৌড়ান। ৩. লক্ষ বস্তুতে আঘাত করার জন্য যাওয়া। ৪. কাউকে সাঁতার শিখানো।”
সূতরাং বোঝা গেলো এই ৪ টি ব্যাতীত বিনোদনের নামে যত খেলাধুলাই হোক তা আল্লাহর যিকির নয়। বরং সেগুলো খেল তামাশা। আর খেল-তামাশার পরিনতি উপরে আয়াত শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূতরাং জীবনের সময়গুলো অনেক মূল্যবান। মূল্যবান সময় খেলতামাশায় নষ্ট না করে সবার উচিত ইসলামের আর্দশ অনুযায়ী জীবন সাজানো। কাল কিয়ামতের দিন ৫ টা প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে কেউ এক পাও উত্তোলন করতে পারবে না। তার একটা প্রশ্ন হচ্ছে তার জীবনের সময় কোন কাজে সে ব্যয় করেছে??

বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬

কুমিল্লায় এক মসজিদে ঢুকে হিন্দুরা কুরআন শরীফ ছিড়ে মলমূত্র ত্যাগ করে আসলো কাদের ছায়াতলে?

ইন্ডিয়ার নির্যাতিত মুসলমানদের চাইতে বাংলাদেশের মুসলমানদের অবস্থা আরো করুন হতে যাচ্ছে। 
মসজিদে ঢুকে কুরআন শরীফ ছিড়ে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে যায় এর চাইতে বড় অবমাননা আর কি আছে? 
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ধান্যদৌল গ্রামের একটি জামে মসজিদে মল-মূত্র ত্যাগ, ২৫/৩০ টি কোরআন শরীফ ছিড়ে ফেলা, কোরআন রাখার রেল ও মসজিদের ৪ টি জানালার গ্লাস ভাংচুর করার খবর পাওয়া গেছে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধান্যদৌল গ্রামের বাজারের জামে মসজিদে মঙ্গলবার গভীর রাতে হিন্দুরা মূল দরজার তালা খুলে প্রবেশ করে। পরে মসজিদের ৪টি জানালার গ্লাস, কোরআন শরীফ রাখার বেশ কিছু রেল ভাংচুর, ২৫/৩০টি পবিত্র কোরআন শরীফ ছিড়ে ফেলে এবং মসজিদের মেহরাব সংলগ্নস্থানে মল-মূত্র ত্যাগ করে পূণরায় দরজায় তালা আটকিয়ে পালিয়ে যায়। (http://bit.ly/2e8fCTdhttp://bit.ly/2enFIxC)
আল্লাহ পাকের ঘর মসজিদে ঢুকে যখন হিন্দুরা কুরআন শরীফ ছিড়ার সাহস দেখাচ্ছে, সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করার সাহস দেখাচ্ছে প্রশ্ন হচ্ছে কাদের ছায়াতলে থেকে এই সাহস পাচ্ছে? 
একের পর এক ইসলাম অবমাননা হচ্ছে সরকার নিরব কেন? 
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “দুর্গাপূজা শুধু হিন্দুদের নয় মুসলমানদেরও উৎসব” এই শিরকি কথার প্রতিবাদ করে ফেসবুকে স্ট্যটাস দেয়ায় এক ইমামকে গ্রেফতার করা চোখের পলকে (http://bit.ly/2euJune)। কিন্তু নিশ্চিত থাকেন মসজিদে কুরআন শরীফ ছিড়া বা মল মূত্র ত্যাগের কোন বিচার হবে না.... গ্রেফতারও হবে না কেউ। কারনটা কি বলে দিতে হবে?

ইন্ডিয়ায় মুসলমানদের গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে, অথচ সেই ইন্ডিয়া গরুর গোশত রপ্তানীতে বিশ্বে দ্বিতীয়

হিন্দুরা নিজেদের দেবতা জবাই হওয়ার প্রলাপ বকে মুসলমানদের গরুর জবাই করা এবং গোশত খাওয়া নিষিদ্ধ করলো, অথচ সেই ইন্ডিয়াই গরুর গোশত রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। এমন পরস্পর বিরোধী কাজের রহস্য কি ?
<b>ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে গরু জবাই, গরুর গোশত বিক্রি ও খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি আজ (মঙ্গলবার) এ সংক্রান্ত বিলে সই করেছে।<b/>
এ আইন অমান্যকারী ব্যক্তি উচ্চমাত্রায় জরিমানা দেয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের মুখোমুখি হবে।
১২০ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ভারতের প্রায় ৮০% অধিবাসী হিন্দু এবং গাভীকে তারা ‘দেবতা’ হিসেবে সম্মান করে। এ কারণে ভারতের অনেক রাজ্যে আইন করে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেক্যুলার ভারতের বাকি রাজ্যগুলোতে গরু জবাইয়ের ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মুসলমানদের গরু জবাইয়ের ওপর কড়াকড়ি করা হয়। তবে ভারতে বিফ বা ‘লাল মাংস’ হিসেবে যা পাওয়া যায় তা মূলত মহীষের গোশত।
১৯৯৫ সালে মহারাষ্ট্র রাজ্যের বিজেপি-শিবসেনা সরকার প্রথম গরু জবাই নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছিল। মহারাষ্ট্র অ্যানিম্যাল প্রিজারভেশন (সংশোধন) বিলটি ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু গত ১৯ বছরে ভারতের কোনো প্রেসিডেন্ট বিলটিতে সই না করায় তা আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি।
গত বছর মহারাষ্ট্রে আবার ক্ষমতায় ফেরে উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। এরপর দলের নেতারা আবার বিলটিকে আইনে পরিণত করার জন্য চেষ্টা চালাতে শুরু করে। গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্র বিধানসভার একদল বিজেপি এমপি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিলটিতে সই করার অনুরোধ জানান।
আজ বিলটিতে সই করার পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফ্যাডনাভিস এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট মুখার্জিকে ধন্যবাদ জানায়।
সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে গরু জবাই নিষিদ্ধ করে যে আইন হলো তা ভারতের ইতিহাসে এ সংক্রান্ত সবচেয়ে কঠোর আইন। কারণ, এতে গাভীর পাশাপাশি ষাঁড় ও বলদ জবাইকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি অন্য কোথাও জবাই হয়েছে এমন গরুর গোশত সংরক্ষণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

অথচ এবার&nbsp; দেখুন আসল চিত্র।&nbsp; এই ভারতই হচ্ছে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় গরুর গোশত রপ্তানিকারক দেশ। <strong>নিজেদের গোদেবতার গোশত বেচে তারা বিশ্বের মধ্যে গরুর গোশত রপ্তানিতের দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে।</strong>
<a href="http://noorejulfikar.files.wordpress.com/2015/03/wpid-2015-03-12-14_27_16.jpg"><img title="2015-03-12--14_27_16.jpg" class="alignnone size-full" alt="image" src="http://noorejulfikar.files.wordpress.com/2015/03/wpid-2015-03-12-14_27_16.jpg"/></a>
সূত্র:
(১) <a href="http://en.m.wikipedia.org/wiki/Beef">[উইকিপিডিয়া তথ্য]</a>
(২) <a href="http://www.indexmundi.com/img/g.gif">[রপ্তানিকারক দেশের তালিকা]</a>
<a href="http://noorejulfikar.files.wordpress.com/2015/03/wpid-2015-03-12-14_25_27.jpg"><img title="2015-03-12--14_25_27.jpg" class="alignnone size-full" alt="image" src="http://noorejulfikar.files.wordpress.com/2015/03/wpid-2015-03-12-14_25_27.jpg"/></a>
এখন কথা হচ্ছে,
মালাউনরা নিজেরা গোমাতার গোশত বেঁচে তালিকায় বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে থাকতে পারে, আর মুসলমানরা সেই গোশত খেলে হিন্দুদের চুলকানি ওঠে ? এইটা কোন আইন ?
এটা স্পষ্ট ইসলাম এবং মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ব্যাতীত আর কিছুই নয়।

আপনারা কি জানেন লা’মাযহাবীরা কয় দলে বিভক্ত?

যারা মাযহাব অনুসরন করে তাদের লা’মাযহাবীরা বলে থাকে তোমরা নিজেদের চার ভাগে ভাগ করে নিয়েছো। কেউ হানাফী, কেই শাফেয়ী, কেউ মালেকী, কেউ হাম্বলী। কেন এই বিভক্তি… ইত্যাদি .. ইত্যাদি।
আসলে যারা নিজেদের শরীরের দুর্গন্ধ সর্ম্পকে সচেতন না হয়ে অন্যকে নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে তারা কোন খাছলতের নতুন করে বলা দরকার নাই। আপনারা সবাই জানেন এই মযহাব অস্বীকারকারীদের অনেক নাম রয়েছে। যেমন- সালাফী, আহলে হাদীস, মুহম্মদী ইত্যাদি। তারা দাবি করে থাকে মাযহাব পন্থীগন চার দলে বিভক্ত হয়ে মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট করছে। নাউযুবিল্লাহ।
তাহলে কথা হচ্ছে, লা-মাযহাবীরাই মুসলমানদের জামাত থেকে বের হয়ে কি মুসলমানদের মাঝে ঐক্য ও সংহতি বজায় রেখেছে, না কি মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতি নষ্ট করেছে? তাদের বই পড়ে দেখুন! এমনকি তারা নিজেরা বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে একদল অপর দলকে কাফের বলছে। লা’মাযহাবীদের গুরু ডাঃ জাকির নায়েক “ইউনিটি ইন দ্য মুসলিম উম্মাহ”১২৫ শিরোনামের লেকচারে বলেছে-
Ahle Hadith, which Ahle Hadith? In Bombay there are two Ahle Hadith, Jamiete Ahle Hadith, and Gurba Ahle Hadith. Which Ahle Hadith do you belong to? One Ahle Hadith is blaming the other Ahle Hadith.
অনুবাদ: “আহলে হাদীস! কোন আহলে হাদীস? বোম্বেতে আহলে হাদীসদের দু’টি দল রয়েছে, ১.জমিয়তে আহলে হাদীস ২.গুরবা আহলে হাদীস। তুমি কোন আহলে হাদীসের কোন গ্র“পের? এক আহলে হাদীস আরেক আহলে হাদীসকে দোষী সাব্যস্ত করছে” (Dr. Zakir Naik talks about salafi_s _ AHL E HADITH http://www.youtube.com/watch?v=Szzn9lFg9n0)
জাকির নায়েক আরও বলেছে,
In the Ahle Hadith, I went to Kashmir, there are many groups of Ahle Hadith, I went to Kerala, Mujahidin – KNM, Kerala Nadvathul Mujahideen.
There, people don’t call themselves Ahle Hadith – Mujahideen. If you go to Saudi Arabia and say: I am Ahle hadith, what is this new Ahle hadith? Very few people of Saudis know who that Ahle Hadith. For them they know the Salafi. But Salafi and Ahle hadith belong to the same, groups or names are different. In some country Ansari, why?
অনুবাদ: “আহলে হাদীসদের মাঝেও অনেক গ্রুপ রয়েছে। আমি কাশ্মীরে গিয়েছি, সেখানে আহলে হাদীসদের অনেক গ্রুপ। আমি কেরালায় গিয়েছি, সেখানে তারা নিজেদেরকে আহলে হাদীস বলে না। তারা কেরালা নাদভাটুল মুজাহিদিন (কে.এন.এম) নামে পরিচিত। আপনি যদি সউদি যান সেখানে গিয়ে যদি বলেন, “আমি আহলে হাদীস, তারা বলবে, এ নতুন আহলে হাদীস আবার কারা? অধিকাংশ আরব জানে না যে, আহলে হাদীস কি? তারা সালাফী গ্র“পকে চেনে। যদিও সালাফী ও আহলে হাদীস একই দল, এদের নাম ভিন্ন। আবার দেখা যায়, একই দেশে এদের কোন গ্র“পের নাম আনসারী, এটি কেন? (Dr.Zakir Naik talks about salafi_s _ AHL E HADITHhttp://www.youtube.com/watch?v=Szzn9lFg9n0)
সালাফীদের সম্পর্কে জাকির নায়েক বলেছে,
Sheikh Nasiruddin Albani says we should call ourselve salafi. My question is which Salafi, my counter question Do you know how many Salsfi are there? Are you Kutubi, Sururi, or Madkhali. I can name another Salafi.
অনুবাদ: “ নাসীরুদ্দিন আলবানী বলে, আমাদের নিজেদেরকে সালাফী বলা উচিৎ। আমার প্রশ্ন হল, কোন সালাফী? আমার উল্টো প্রশ্ন, তুমি কি জানো, সালাফীদের কতগুলো গ্রুপ আছে? তুমি কি “কুতুবী, সুরুরী না কি মাদখালী? আমি সালাফীদের আরও অনেক গ্রুপের নাম বলতে পারব।” (http://www.youtube.com/watch?v=Szzn9lFg9n0)
মজার বিষয় হচ্ছে জাকির নায়েকের অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ত্ব হচ্ছে, নাসীরুদ্দিন আলবানী । আলবানী সম্পর্কে জাকির বলেছে, তিনি সাগরতুল্য হলে জাকির নায়েক তার তুলনায় এক ফোঁটা পানির সমতুল্যও নয়।” এইবার দেখা যাচ্ছে কুয়োর ব্যাং সাগরে সাঁতরাচ্ছে। হা হা হা!
সালাফী প্রসঙ্গে জাকির নায়েক আরো বলেছে,
“But even in Salafi there are various groups and if you go to U.K. Mashallah! Subhanallah! Allahu Akbar! There are so many groups. In U.K each group fighting against the other, calling the other Salafia kafir, Nauzubillah! . . . Which salafia do you belong to?
অনুবাদ: “সালাফীদের নিজেদের মধ্যেই অনেক গ্রুপ রয়েছে। তুমি যদি যুক্তরাজ্যে যাও, মাশাআলাহ! সুবহানালাহ! আলাহু আকবার! সেখানে সালাফীদের অনেক গ্রুপ। একদল আরেকদলকে কাফের বলে তাদের সাথে ফাইট করছে, নাউযুবিলাহ! সুতরাং তুমি কোন সালাফী? (http://www.youtube.com/watch?v=Szzn9lFg9n0)
সালাফীদের যদি এ অবস্থা হয়, তবে তারা চার মাযহাব ছেড়ে কুরআন ও সহীহ হাদীস মানতে গিয়ে মুসলিম উম্মাহের ক্ষতি হয়েছে, না কি লাভ হয়েছে? তারা কি এক পাটফরমে এসেছে? না কি তাদের অনৈক্য আরও বেড়েছে? তাদের দাবী হল, আমরা শুধু কুরআন ও সহীহ হাদীস মানব, তবে তাদের মাঝে এত গ্র“পিং কেন? আর মাযহাব অনুসারীদের প্রতি এত বিদ্বেষ কেন ?

মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৬

আহলে বাইত শরীফ এবং খুলাফায়ে রাশেদীন উনাদের নামের সাথে আলাইহিস সালাম লেখার দলীল

আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্যতম ইমাম হযরত ইমাম হুসাইন আলাইসি সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে অালাইহিস সালাম লেখার কারনে এক ওহাবী আমাকে শিয়া বলে গালি দিয়েছে। আমি অাজকে সকলের সামনে প্রমান করবো আলাইহিস সালাম লেখা শিয়াদের বৈশিষ্ঠ নয় বরং আলাইহিস সালাম লেখা কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ এবং ইমাম মুহাদ্দিসদের বক্তব্য দ্বারা প্রমানিত। আলাইহিস সালাম’ বাক্যটির অর্থ হলো উনার উপর সালাম অর্থাৎ খাছ শান্তি বর্ষিত হোক। উল্লেখ্যএক মুসলমান অপর মুসলমানের সাথে সাক্ষাত হলে সালাম দেয়া ও নেয়া কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এরই নির্দেশ।
হাদীস শরীফে এসেছে , عن حضرت عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه ان رجلا سال رسول الله صلى الله عليه وسلم اى الاسلام خير قال تطعم الطعام وتقرئ السلام على من عرفت ومن لـم تعرف
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করলেনইসলামের কোন বিষয়টি উত্তমতিনি বললেন, (ক্ষুধার্তকে) খাদ্য খাওয়ানো এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকল মুসলমানকে সালাম দেয়া। (বুখারী শরীফ – কিতাবুল ঈমান : হাদীস নম্বর ২৮)
এক মুসলমানের উপর আরেক মুসলমানের সদ্ব্যবহারের ছয়টি হক্ব রয়েছে। তারমধ্যে প্রথমটিই হচ্ছে يسلم عليه اذا لقيه অর্থাৎ যখন কারো সাথে সাক্ষাৎ হবে তাকে সালাম দিবে।” (তিরমিযী শরীফ – কিতাবুল আদব: হাদীস ২৭৩৬)
মূল কথা হলোএকজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের সাথে সালাম বিনিময়ের যে উদ্দেশ্যকোন মুসলমানের নামের সাথে আলাইহিস সালাম ব্যবহারের সে একই উদ্দেশ্য। এছাড়া একজনের সালাম আরেকজনের নিকট পৌঁছানোর মাসয়ালা হলো: সে বলবে যেঅমুক ব্যক্তি আপনাকে সালাম দিয়েছেন। এর উত্তরে সালামের উত্তরদাতা বলবেন- وعليكم السلام وعليه السلام অর্থাৎ: আপনার প্রতি এবং যিনি সালাম পাঠিয়েছেন উনার প্রতিও সালাম অর্থাৎ শান্তি বর্ষিত হোক। দেখা যাচ্ছেসালাম প্রেরণকারী ব্যক্তির সালামের জাওয়াব দানকালে উনার ক্ষেত্রে আলাইহিস সালাম’ ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই,বলার অবকাশ রাখে না যে, ‘আলাইহিস সালাম’ বাক্যটি হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যতীত অন্যান্যদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা শরীয়তের বিধানে নিষেধ তো নেই বরং আদেশ রয়েছে।
সূরা নমল-এর ৫৯নং আয়াত শরীফ-এর মধ্যে ইরশাদ হয়েছেমহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন- قل الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুনসমস্ত প্রশংসাই মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যে এবং সালাম বা শান্তি বর্ষিত হোক উনার মনোনীত বান্দাগণ উনাদের প্রতি।”
রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত এক রেওয়ায়েতে আছেআয়াত শরীফ-এ عباده الذين اصطفى মনোনীত বান্দা’ বলতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বোঝানো হয়েছে। হযরত ইমাম ছুফিয়ান ছওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও এ মতই গ্রহন করেছেন। মূলত عباده الذين اصطفى এ আয়াতে কারীমা দ্বারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাসহ সমস্ত আওলিয়ায়ে কিরাম উনাদেরকে বোঝানো হয়েছে। (তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে কুরতুবী, ইবনে কাছীর, তাফসীরে কবীর ইত্যাদি)
উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে থেকে স্পষ্ট জানা গেলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও আওলিয়ায়ে কিরামদের ব্যাপারেও আলাইহিস সালাম বা সালামের বিষয় বলা হয়েছে।
আমরা প্রতিদিন যে নামাজে তাশাহুদ পাঠ করি, সেখানে এই কথা বলি- السلام علينا وعلى عباد الله الصالـحين অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ব সালামরহমতবরকত আমাদের উপর অর্থাৎ সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর এবং মহান আল্লাহ পাক উনার যারা ছালিহীন বা নেককার বান্দা উনাদেরও উপর।” আলাইহিস সালাম ব্যবহার যদি শুধু নবী রসূলদের জন্য খাছ হতো তবে কি তাশাহুদে এই দোয়া থাকলো কেন? এখান থেকেও প্রমান হলো আলাইহিস সালাম নেককার বান্দাদের বেলায় ব্যবহার করা যায়।
সূরা নমল-এর উক্ত আয়াত শরীফ-এর তাফসীর বা ব্যাখ্যায় বর্ণিত রয়েছে- والارجح فى مثل لقمان ومريم والـخضر والاسكندر الـمختلف فى نبوته ان يقال رضى الله عنه او عنها ولو قال عليه السلام او عليها السلام لا بأس به অর্থ: অতএব প্রণিধানযোগ্য উদাহরণ হলো: হযরত লুক্বমানহযরত মারইয়ামহযরত খিযিরহযরত সেকেন্দার যুল ক্বরনাইন। উনাদের নবী হওয়ার ব্যাপারে ইখতিলাফ থাকার করণে উনাদের শানে রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অথবা আনহা বলা হয়। আর কেউ যদি উনাদের শানে আলাইহিস সালাম অথবা আলাইহাস সালাম বলেএতে কোনই অসুবিধা নেই।(তাফসীরে রূহুল বয়ান ৭ম খ- ২২৮ পৃষ্ঠা) মূল কথা হলো: উল্লেখিত ব্যক্তিগণ উনারা কেউই নবী-রসূল ছিলেন না। বরং উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন বিশেষ শ্রেণীর ওলীআল্লাহ। এখন উনাদের শানে যদি আলাইহিস সালাম কিংবা আলাইহাস সালাম ব্যবহারে কোন রকম অসুবিধা বা নিষেধ না থাকে তাহলে অন্যান্য বিশেষ শ্রেণীর পুরুষ ওলীআল্লাহ কিংবা মহিলা ওলীআল্লাহ উনাদের শানে অসুবিধা বা নিষেধ হবে কেন?
আলাইহিস সালাম ব্যবহার করা কি নতুন কিছু ???
না, মোটেও নতুন কিছু নয়। হাদীস শরীফের কিতাবে অসংখ্য স্থানে আহলে বাইত শরীফ উনাদের নামের শেষে আলাইহিস সালাম বলা হয়েছে। হাদীস শরীফের অন্যতম কিতাব “সহীহ বুখারী” শরীফে একাধিক স্থানে হযরত আলী আলাইহিস সালামহযরত ফাতেমুয যাহারা আলাইহাস সালামহযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আলাইহিস সালাম ব্যবহার যদি শিয়া হয় তবে কি ওহাবীরা ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে শিয়া বলবে?
দারু শুয়াবকাহেরা মিশর থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফে ৪৯৪৭ নম্বর হাদীস শরীফের ইবারতটা নিম্নে দেয়া হলোঃ
حَدَّثَنَا يَحْيَى ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، عَنْ عَلِيٍّ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ : كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُهُ مِنَ النَّارِ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ أَفَلاَ نَتَّكِلُ قَالَ : لاََ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ
উক্ত হাদীস শরীফের সনদটা পড়ে দেখুন। হযরত আলী আলাইহিস সালাম লেখা আছে। মজা এখানেই শেষ নয় এই হাদীস শরীফের সনদে আলাইহিস সালাম ব্যবহার নিয়ে সালাফীদের মূল ওয়েব সাইট http://www.ahlalhdeeth.com/ এ একটা প্রশ্ন প্রকাশিত হয়। প্রশ্নকারী জানতে চায় উক্ত হাদীস শরীফে আলাইহিস সালাম আছে কিনা ? জবাবে সালাফীরাও স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে উক্ত হাদীস শরীফে হযরত আলী আলাইহিস সালাম লেখা আছে। (সূত্র: http://archive.is/rWFdb) নিম্নে স্কিনশট দেয়া হলো:
%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ab%e0%a7%80
আহলে হাদীন সালাফীদের ওয়েবসাইটে আলাইহিস সালাম লেখার প্রমাণ
বুখারী শরীফের باب المرأة تطرح عن المصلي شيئا من الأذى তে ৫২০ নম্বর হাদীস শরীফে হযরত ফাতিমা আলাইহিস সালাম বলা হয়েছে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে , وَضَعَهُ بَيْنَ كَتِفَيْهِ وَثَبَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاجِدًا فَضَحِكُوا حَتَّى مَالَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ مِنَ الضَّحِكِ فَانْطَلَقَ مُنْطَلِقٌ إِلَى فَاطِمَةَ – عَلَيْهَا السَّلاَمُ – وَهْيَ جُوَيْرِيَةٌ فَأَقْبَلَتْ تَسْعَى
ইবারতটা দেখুন যেখানে হযরত ফাতেমা আলাইহাস সালাম বলা হয়েছে সেখানে আন্ডার লাইন করে দেয়া হয়েছে। দেখা গেলো সহীহ বুখারী শরীফে আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্যতম হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথেও “আলাইহাস সালাম” লেখা আছে। শুধু তাই নয় আহলে বাইত শরীফের তৃতীয় ইমাম হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথেও “আলাইহিস সালাম” লেখা আছে। প্রমান দেখুন-
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ : حَدَّثَنِي حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ ، عَنْ مُحَمَّدٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، أُتِيَ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ زِيَادٍ بِرَأْسِ الْحُسَيْنِ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – فَجُعِلَ فِي طَسْتٍ فَجَعَلَ يَنْكُتُ وَقَالَ فِي حُسْنِهِ شَيْئًا فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ أَشْبَهَهُمْ بِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ، وَكَانَ مَخْضُوبًا بِالْوَسْمَةِ
দেখুন আন্ডার লাইনকৃত অংশে ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে “ আলাইহিস সালাম” লেখা রয়েছে।
মজার কথা শুনেন বর্তমানে হাদীস শরীফ বা বিভিন্ন কিতাবের ভান্ডর হচ্চে “মাকতাবায়ে শামেলা” এবং “জামেউল কালিম”।  এই দুইটা সপ্টওয়ারে আন্ডারলাইনকৃত অংশ সার্চ করে দেখেন। দেখবেন হুবুহু আলাইহিস  সালাম সহ এই  হাদীস শরীফ পেয়ে যাবেন। মাকতাবায়ে শামেলাতে  বুখারী শরীফের রেফারেন্সে ৯ স্থানে আহলে বাইত শরীফ উনাদের নাম মুবারকের সাথে আলাইহি সালাম রয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
“জামেউল কালিম” সপ্টওয়ারে সার্চ করে দেখেন। নিম্নে সবার জন্য স্কিনশট দেয়া হলো
12
জামিউল কালিম সপ্টওয়ারে আলী আলাইহিস সালাম লেখা 
এখানেও দেখা গেলো হযরত আলী আলাইহিস সালাম লেখা আছে, বুখারী শরীফের রেফারেন্স দিয়ে।
অনলাইনে হাদীস শরীফের অন্যতম সার্চের সাইট হচ্ছে http://library.islamweb.net/ এই সাইটে এই লিংকে (http://bit.ly/2eJxfY3 ) ক্লিক করেন। এবার সনদটা একটু পড়ে দেখেন। নিম্নে স্কিনশট দেয়া হলো-
cap88ture
laibrary.islamweb.net সাইটেও লেখা হযরত আলী আলাইহিস সালাম
হাদীস শরীফের অন্যতম নির্ভযোগ্য কিতাব ‘সুনানে দারু কুতনীর ৯ জায়গায় হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম ও ৩৪ স্থানে হযরত উমর আলাইহিস সালাম লেখা আছে। সকলে জানার জন্য কয়েকটা ইবারত উল্লেখ করা হলো-
30 – حدثنا أبو بكر ، أحمد بن محمد بن إسماعيل الآدمي قال : نا محمد بن الحسين الحنيني ، قال : نا عبد العزيز بن محمد الأزدي ، قال : نا حفص بن غياث ، قال : سمعت جعفر بن محمد ، يقول : ما أرجو من شفاعة علي عليه السلام شيئا ، إلا وأنا أرجو من شفاعة أبي بكر عليه السلام مثله ، ولقد ولدني مرتين
উক্ত কিতাবের ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবা অধ্যায়ে এ্ই হাদীস শরীফ পাবেন যেখানে হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম লেখা আছে। যা আপনারা মাকতাবায়ে শামেলাতেও পাবেন। নিচে শামেলার স্কিন শট দেয়া হলো-
samela
শামেলাতে দারু কুতনী কিতাবে হযরত আবু বকর অলাইহিস সালাম লেখা আছে
“দারু কুতনী কিতাবের ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবা অধ্যায়ে” হযরত উমর আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে “ আলাইহিস সালাম” লেখা আছে। নিম্নে ইবারত ও সনদ দেয়া হলো:
3 – حدثنا محمد بن منصور بن أبي الجهم ، نا السري بن عاصم ، قال : نا أبو معاوية ، عن الحجاج بن أرطأة ، عن من ، أحبوه ، عن الشعبي ، قال : قال علي عليه السلام : لم أكن لأحل عقدة عقدها عمر عليه السلام
দেখুন মাকতাবেয়া শামেলাতে দারু কুতনীতে হযরত উমর আলাইহিস সালাম উনার নামে সাথে  আলাইহিস সালাম”লিখে অনুসন্ধান করলে কতগুলো রেজাল্ট আসে-
%e0%a7%a7
%e0%a7%a8
%e0%a7%a9
%e0%a7%aa
হাদীস শরী্ফের অন্যতম সপ্টওয়ার জামিউল কালিমে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি  আলাইহি উনার কিতাবুয যুহদ এর দলীল আছে। উক্ত কিতাবে একটা অধ্যায় আছে যার নাম হচ্ছে  زُهْدُ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عَلَيْهِ السَّلامُ  । স্কিনশট দেয়া হলো-
hambel
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে আলাইহিস সালাম
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহতুল্লাহি আলাইহি রচিত “ফাদ্বায়েলুছ ছাহাবা” কিতাবে হযরত আলি আলাইহিস সালাম লেখা আছে , নিম্নে  স্ক্যান কপি দেয়া হলো,


ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি রচিত ফাদ্বায়েলুছ ছাহাবা কিতাবে “হযরত আলী আলাইহিস সালাম’


এছাড়াও জামেউল কালিম সপ্টওয়ার থেকে আরো কিছু কিতাবের স্কিনশট দেয়া হলো, যেখানে স্পষ্ট ভাবে আহলে বাইত শরীফ ও খুলাফায়ে রাশেদীন উনাদের নাম মুবারকের সাথে আলাইহিস সালাম লেখা ফাছে। 
*******************************
9d
***********************************
33d
****************************************
66d
*********************************************
untitl66ed
*******************************************
untitled2
ওহাবীদের কাছে প্রশ্ন মাকতাবায়ে শামেলা ও জামিউল কালিম কি শিয়াদের বানানো? বুখারী শরীফের মূল কিতাবে যেখানে আলাইহিস সালাম বলা আছে সেখানে ওহাবীদের চুলকানীর সূত্রপাত কি হতে পারে? নাকি ইয়াযিদের মত আহলে বাইত শরীফের প্রতি বিদ্বেষ??

দেওবন্দীদের অন্যতম মুরুব্বী মুফতী শফীর মা’রেফুল কুরআনে’ নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম সালাম ছাড়া অন্যদের বেলায় আলাইহিস সালাম বলা বৈধতা প্রমাণ হয় বলে উল্লেখ আছে। (মারেফুল কুরআন ৬ষ্ঠ খন্ড ৬৫৫ পৃষ্ঠা : প্রকাশনা- ইসলামী ফাউন্ডেশন)

এবার দেখুন আসল চমক। সালাফীদের প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত অর্থাৎ “তাওহীদ পাবলিকেশনস” থেকে প্রকাশিত প্রকাশিত বুখারী শরীফ থেকে আহলে বাইত উনাদের নামের শেষে আলাইহিস সালাম এর দলীল দেখেন। নিচে তাওহীদ পাবলিকশনস থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফের শুরুর পৃষ্ঠা।


এবার দেখুন এই বুখারী শরীফ উপদেষ্টা ও সম্পাদনা পরষদে আছে সকল সালাফীদের পরিচিত সব মুখ। লাল কালিতে চিহিৃত অংশ গুলো দেখে নেন।


এবার দেখুন তাওহীদ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফের ৩য় খন্ড ৬২৯ পৃষ্ঠা। এখানে একটা বাব রয়েছে , বাবে নাম হচ্ছে “বাবু মানাকিবি কারিবাতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া মানাক্বাবাতি ফাতিমাতা আলাইহাস সালাম বিনতি নাব্যিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। খুব ভালো করে দেখেন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে “আলাইহাস সালাম” লেখা আছে। আর ৩৭১১ নম্বর হাদীস শরীফের চিহিৃত ইবারত লক্ষ্য করেন। সেখানে হযরত ফাতিমা “আলাইহাস সালাম” লেখা আছে। নিম্নের লাল বক্স করা অংশ লক্ষ্য করুন।


সালাফীদের হাদীস শরীফের অন্যতম সাইট http://www.hadithbd.com/ এর এই লিংক এ ক্লিক করুন http://bit.ly/2hul4MS। এই লিংকে ৩৭১১ নম্বর হাদীস শরীফের আরবী ইবারত দেখেন, যা আমি লাল কালিতে আন্ডার লাইন করে দিয়েছি। সেখানে হযরত ফাতিমা “আলাইহাস সালাম” লেখা আছে।


হাদীস শরীফের অন্যতম সাইট sunnah.com এ উক্ত হাদীস শরীফে হযরত ফাতিমা “আলাইহাস সালাম” লেখা আছে। লিংক https://sunnah.com/bukhari/62/62


এখন যারা আহলে বাইত ও ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের নাম মুবারকের সাথে আলাইহিস সালাম লিখলে আপত্তি করার আগে নিজেদের মুরুব্বীদের বিষয়ে কি রায় দিবে?