আমরা অনেকেই ৭ তম সংখ্যাকে লাকী বলে থাকি। মাসের সাত তারিখে কিছু হলে বা সাত সংশ্লিষ্ট কিছু হলে সেটাকে সৌভাগ্য জনক বলে অনেক লাকী সেভেন বলে থাকে। [বিস্তারিত জানতে দেখুন]
আসলো আমরা কি জানি এই সাত সংখ্যার রহস্য ??
কেন এটা লাকী বলা হয় ?
আর মুসলমান হয়ে কি এই সাত সংশ্লিষ্ট কিছুকে লাকী বলা যাবে কিনা ?
আসুন আমরা দেখি সেভেন এর মূল রহস্যটা কি -
উল্লেখ্য মূলত ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা এই লাকী সেভেন এর প্রবর্তক। সাত সংখ্যাটা তাদের কাছে বিশেষ মূল্যায়নযোগ্য সংখ্যা।
যে সব কারনে ইহুদীদের কাছে ৭ সংখ্যা সমাদৃত -
√ তাদের কথিত গড সপ্তম দিনকে পবিত্র করে সেদিন বিশ্রাম গ্রহণ করে। ( হিব্রু ভাষায় যা সাবাত নামে পরিচিত )
√ তাদের দৃষ্টিতে পবিত্রতা অর্জন করতে সাত দিনের প্রয়োজন।
√ তাদের স্যাবাটিক্যাল প্রতি সাত বছরে একবার আগমন করে।
√ তাদের জুবলী বছর সাত বার সত্তর বছর পূর্ন হওয়ার পর আগমন করে।
√ তাদের তাওরাত শরীফে সাতবার ও সাত সপ্তাহের কথা রয়েছে।
√ ইহুদীদের বিয়েতে সাতটি স্ত্রোত্ববাক্য পাঠ করা হয়।
√ তাদের বিয়ের পর সাত দিন উৎসব পালিত হতো।
√ তাদের কথিত গড ইহুদীদের বলে, তোমরা যখন ইসরাঈলে প্রবেশ করবে তখন সাতটি জাতীকে স্থানচ্যুত করবে। যথা-
(১) হিট্টি ( ২) গিরগেসাইট (৩) অ্যামোরাইট (৪) ক্যানানাইট (৫) পেরিজাইট (৬) হিভাইট (৭)জেবুসাইট !
√ তাদের প্রথা অনুযায়ী মুখমন্ডলের সাতটি গহ্বর , দুই চোখ, দুই নসারান্ধ্র , দুই কান , এবং মুখকে বলা হয় সপ্তপ্রদীপ।
√ তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিতে সাত শাখা বিশিষ্ট ঝাড়বাতি জ্বালানো হয়।
√ ১৯৪৭ সালের সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে ইউরোপীয় ইহুদীরা এক্সোডাস জাহাজে ফ্রান্স হতে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে পাড়ী জমিয়েছিলো।
----------------------------------
যেসকল কারনে খ্রিষ্টানদের কাছে সাত সংখ্যা সমাদৃত -
√ খ্রিষ্টানদের কাছে সাত সপ্ত মানব সংখ্যা নির্দশক। যথা -
(১) সতীত্ব, (২) সংযম , (৩) বদ্যনতা, (৪) পরহিতকরন (৫) ধৈর্যশীলতা , (৬) উদ্দীপনা, (৭) নম্রতা !
√ তাদের কথিত যীশু বলেছিল, পিটারের উচিত সে ব্যক্তিকে ক্ষমা করা যে তার বিরুদ্ধে সত্তর বার সাতটি গুনাহ করে।
√ তাদের দৃষ্টিতে ভয়াবহ পাপের সংখ্যা সাত।
√ প্রতিটি ভয়াবহ পাপের জন্য পারগ্যাটোরী পর্বতে রয়েছে সাতটি বেদী।
√ নিউ টেস্টামেন্টে ' ম্যাথিউ এর গসপেল ' (১৮:২১) অধ্যায়ে পিটারের প্রতি যীশুর নির্দেশ ছিলো, সাতবার করে সত্তর বার ক্ষমা করা।
√ তাদের মতে হযরত মরিয়াম আলাইহাস সালাম উনার জন্য সাতটি আনন্দ ছিলো। যথা-
(১) পুনর্জন্ম (২) রাহেব বা পাদ্রী কর্তৃক দর্শন (৩) যিশুর জন্ম যীশুর জন্য নৈবদ্য আনয়নকারী (৪) পূর্ব দেশের তিন জ্ঞনী ব্যক্তি (৫) জেরুজালেমের মন্দিরে যিশুপ্রপ্তী (৬) খ্রিষ্টের পূনপুত্থান (৭) হযরত মরিয়াম আলাইহাস সালাম উনার জান্নাতে প্রবেশ।
√ রোমান ক্যাথলিজমে হযরত মরিয়াম আলাইহাস সালাম উনার সাতটি শোকগাঁথা ছিলো ! যথা -
(১) সাইমনের ভবিষ্যৎ কথন (২) মিশরাভ্যন্তরে উড্ডায়ন (৩) যিশু খ্রীষ্টের জেরুজালেম মন্দিরে হারানো তিন দিন (৪) যিশুর ক্রুশ বহন (৫) ক্রুশে যীশুকে বিদ্ধকরন (৬) মৃত যীশুর কোলে মেরীর মূর্তী [ নাউযুবিল্লাহ ] (৭) যিশুর তথাকথিতো পূন্য সমাধির যবনিকা পাতন [ নাউযুবিল্লাহ ]
√ লিউক এর গাসপেল অনুযায়ী যিশুর পথ ৭৭ তম সরল পথ।
বুক অফ রেভুলেশন উদ্ধৃত পশুত্রয়ের মস্তক সংখ্যা নিম্নরুপ-
৭×১০×৭+৭×১০×১০+৭×১০ = ১২৬০
আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা জরুরী , সেটা হচ্ছে - ইংরেজি বর্নমালায় ৭ম বর্ন হচ্ছে G। এই G হচ্ছে God লিখার প্রথম বর্ন ! এই কারনে খ্রিষ্টানরা ৭ কে লাকি বলে। নাউযুবিল্লাহ !
এখন মুসলমানদের কাছে প্রশ্ন এই লাকী সেভেন কথাটা বলা কি আমাদের জন্য জায়িয হবে ?
এগুলো কি আমাদের সৌভাগ্যের প্রতিক হতে পারে ?
লাকী সেভেন বলা মুসলমানদের জন্য জায়িজ নেই , এটা বলা হারাম এবং ঈমান হারানোর কারন।
আর অপরদিকে ১৩ তম সংখ্যাকে ইহুদী খ্রিষ্টানরা আনলাকি থার্টিন বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এর কারন কি জানেন ?
ইংরেজি বর্নমালায় M বর্নটির অবস্থান হচ্ছে ১৩ তম। আর M বর্ণটি আমাদের প্রানপ্রিয় রসূল হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকের প্রথম অক্ষর। কাফিররা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি এতটাই বিদ্বেষ করে যে, এই ১৩ তম সংখ্যাকে তারা আনলাকি ঘোষণা দিয়েছে। আমেরিকা এবং ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে বিমানে, বাসে, ট্রেনে ১৩ নম্বর কোন সিট নেই। এমনকি লিফটেও ১৩ তম কোন সুইচ নেই। বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে এপার্টমেন্টটে ১৩ নম্বর কোন এপার্টমেন্ট নাই, এরকম আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা ১৩ তম সংখ্যাকে আনলাকি বলে বর্জন করেছে শুধুমাত্র ইংরেজি বর্নমালায় ১৩ তম বর্ণ M যা Muhammad ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকের প্রথম অক্ষর হওয়ার কারনে।
কতটুকু বিদ্বেষ পোষন করে কাফিররা একবার ভেবে দেখুন। একারনে কাফিরদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র কুরআন শরীফ পুড়ানো, কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ দিয়ে টয়লেটের টিসুপেপার বানানো, মুসলমানদের পবিত্র কাবা শরীফের নকশায় মদের দোকান খোলার, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র তৈরী করার। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।
আর আফসোসের বিষয় আজ আমাদের মধ্যে কতিপয় নামধারী মুসলমানরা বিধর্মীদের অনুসরন করে সপ্তম সংখ্যাকে লাকি সেভেন এবং তের তম সংখ্যাকে আনলাকি থার্টিন বলে কুফরীতে নিমজ্জিত হচ্ছে।
এখনি সময় মুসলমানদের তওবা করে সচেতন হওয়া, সমস্ত বিধর্মীদের কালচার পরিত্যাগ করে নিজেদের ঐতিহ্য অনুযায়ী জীবন যাপন করা। আর আজ থেকে এই প্রতিজ্ঞা করা জীবনে কোনদিনও স্বপ্নেও যেন লাকি সেভেন এবং আনলাকি থার্টিন একথা না বলে।
এখন উক্ত আলোচনার আলোকে মুসলমান ভাই ও বোনেরা আপনারা বলুন, মুসলমানদের জন্য লাকি সংখ্যা কত ?
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন