বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬

পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধীদের মুখে একটা চপেটাঘাত এবং পরিশিষ্ট কিছু কথা


ওহাবী/দেওবন্দী/কওমী/তাবলীগি/খারেজী/জামাতি/সালাফি ইত্যাদি বাতিল ফির্কা চোখ কান বুজে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হারাম/নাজায়িয/শিরক বলে থাকে !
নাউযুবিল্লাহ !!
অথচ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজমা, এবং কিয়াস এর স্পষ্ট এবং অকাট্য দলীলে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমানিত !!
[ আমার বিগত পোস্ট গুলা দেখুন]

কিন্তু আসুন আমরা এখন ওই সকল দলীল ছাড়াই ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জায়িয প্রমান করবো, এবং যারা নাজায়িয বলবে তারা যে মূর্খ এবং চরম গোমরাহ এবং ধোঁকাবাজ সেটা একটু প্রমান করে দেখাবো !!
কোন জিনিসকে হারাম বলতে গেলে সে বিষয়ে স্পষ্ট দলীল দিতে হবে ! অর্থাৎ কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফের স্পষ্ট হারামের দলীল দেখাতে হবে !
কারন সকল হারাম বিষয় সমূহ স্পষ্ট বলে দেয়া হয়েছে ! নতুন করে কেউ ইচ্ছা মতো হারাম বলতে পারবে না !

আল্লাহ পাক বলেন,-
وقد فصل لكم ما حرم عليكم
অর্থ : তোমাদের প্রতি যা হারাম করা হয়েছে, আল্লাহ পাক তা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন !”‘
( সূরা আনআম ১১৯)
অর্থাৎ হারাম বিষয়ের সকল বিবরন স্পষ্ট বলে দেয়া আছে !
এখন যারা পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নাজায়িয/হারাম বলে তারা কি কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ থেকে একটা আয়াত শরীফ অথবা একটা হাদীস শরীফ দেখাতে পারবে, যেখানে বলা আছে -” ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করা হারাম ‘” !”
নাউযুবিল্লাহ !
চ্যালেঞ্জ থাকলো পারলে একটা আয়াত অথবা একটা হাদীস শরীফ যেনো প্রমান হিসেবে পেশ করে !
যদি দেখাতে না পারে তবে যারা হারাম/নাজায়িয বলবে তারা প্রকাশ্য গোমরাহ এবং ভন্ড এবং নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুশমন।
এবং এ প্রমান দেখাতে না পারলে কোন ভাবেই হারাম বলার সুযোগ নেই !
এবার আসুন আমরা সরাসরি দলীল ছাড়াই ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমান করি !
যেহেতু কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোথাও হারাম/নাজায়িয বলা হয় নাই তাহলে সহজ ভাবেই বোঝা যায় হারাম এবং নাজায়িয এর বিপরীতে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জায়িয এবং হালাল !
কারন হারাম যদি না হয় তাহলে বিপরীতে হালালই হবে !
নাজায়িয যদি না হয় তাহলে বিপরীতে জায়িযই প্রমানিত হবে !
সুবহানাল্লাহ্ !!

আসুন দলীলটা দেখি —
الحلال ما احل الله في كتبه و الحرم ما حرم الله في كتابه وما سكت عنه فهو مما عفي عنه
অর্থ : হালাল হচ্ছে, যা আল্লাহ তায়ালা স্বীয় কিতাবে হালাল করেছেন আর হারাম হচ্ছে, যা আল্লাহ তায়ালা স্বীয় কিতাবে হারাম করেছেন ! এবং যেটা সম্পর্কে নীরব রয়েছেন, সেটা মাফ!”
দলীল-
√ মিশকাত শরীফ- كتاب الا طعمة

এ হাদীস শরীফ থেকে বুঝা যায়, যেটা হালাল সেটা কুরআন শরীফে বলা আছে, যেটা হারাম সেটাও বলা আছে ! আর যে বিষয়ে কিছু বলা হয় নাই, সেটা মুবাহ হবে !
সেটা ফিকাহ এর কিতাবে আছে ,
المختار ان الاصل الاباحة عند الجمهور من الحنفية و الشافعية
অর্থ : জমহুর হানাফী এবং শাফেয়ী উনাদের এ মতামতই রয়েছে যে, প্রত্যেক কিছু মূলত মুবাহ হয়ে থাকে !”
দলীল-
√ ফতোয়ায়ে শামী-১য় খন্ড- কিতাবুত্তাহারাত !

অর্থাৎ, প্রত্যেক বিষয়ের মূলত মুবাহ, স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা ছাড়া কখনোই সেটা হারাম/নাজায়িয হয় না !
সূতরাং আমরা যদি তর্কের খাতিরে স্পষ্ট দলীল পেশ নাও করি তারপরও কোন ওহাবী/দেওবন্দী/খারেজীর ক্ষমতা নাই ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হারাম বা নাজায়িয বলা !
তাই আমি আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত এর অনুসারী ভাই এবং বোনদের বলবো, আপনারা ওহাবী/দেওবন্দী/খারেজী দের ধোঁকায় বিভ্রান্ত হবেন না !
তারা যদি আপনাদের বলে হালালের দলীল দিতে, আপনারা হারামের দলীল তলব করবেন !
কারন কোন বিষয়কে নাজায়িয প্রমান করতে হারামের দলীল পেশ করতে হয় !
হারামের দলীল না থাকলে সেটা এমনিতেই সেটা মুবাহ এবং জায়িয হয় !
সুবহানাল্লাহ্ !!

পরিশেষে খারেজী যারা পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধী তারা যে ইবলিশ শয়তানের গোলাম সে বিষয়ে একটা প্রামান্য দলীল–
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফে সব চাইতে বেশি কষ্ট পেয়েছিলো কে জানেন ? সব চাইতে বেশি কষ্ট পেয়েছিলো ইবলিশ শয়তান । সে এতোটাই কষ্ট পেয়েছিল যে, কষ্টে সে রীতিমত কান্না করছে।
এপ্রসঙ্গে কিতাবে বর্নিত আছে–>
ﺃﻥ ﺇﺑﻠﻴﺲ ﺭﻥ ﺃﺭﺑﻊ ﺭﻧﺎﺕ ﺣﻴﻦ ﻟﻌﻦ ﻭﺣﻴﻦ
ﺃﻫﺒﻂ ﻭﺣﻴﻦ ﻭﻟﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺣﻴﻦ ﺃﻧﺰﻟﺖ ﺍﻟﻔﺎﺗﺤﺔ

“শয়তান চার বার উচ্চস্বরে কেঁদেছিল ,প্রথম বার যখন আল্লাহ তায়ালা তাকে অভিশপ্ত আখ্যা দেন; দ্বিতীয়বার যখন তাকে বেহেস্ত থেকে বের করে দেয়া হয়। তৃতীয়বার, যখন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেলাদত শরীফ হয়। এবং চতুর্থবার যখন সূরা ফাতেহা নাযেল হয়।”
দলীল-
√ আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া-২য় খণ্ড ১৬৬ পৃষ্ঠা

এখন সমাজে মানুষ রুপী কিছু ইবলিশ আছে, মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা শুনলেই এদের শরীর জ্বালা পোড়া করে।সূতরং প্রমান হচ্ছে, যারা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরোধী তারা শয়তানের শাগরেদ । কারন এদিনে শয়তানও কষ্ট পেয়েছিল এখন তার শাগরেদরা কষ্ট পাচ্ছে। তাই এসকল শয়তানদের নিজেদের বিষের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরতে দিন।
পরিশেষে যিনি বিখ্যাত মুহাদ্দিস , যিনি মদীনা শরীফে ইলমের চর্চা করেছেন। যিনি প্রতিদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত লাভ করতেন, সেই ইমামুল মুহাদ্দিসিন শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বক্তব্য এবং দোয়ার মাধ্যমে আমরাও বলতে চাই—
” আয় আল্লাহ পাক ! আমার এমন কোন আমল নেই, যা আপনার মুবারক দরবারে পেশ করার উপযুক্ত মনে করি। আমার সমস্ত আমলের নিয়তের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে । তবে আমি নগণ্যের শুধুমাত্র একটি আমল আপনার পবিত্র জাতের দয়ায় অনেক সম্মানিত বা মর্যাদাবান। আর সেটা হচ্ছে- পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে এর মজলিস করি এবং এ মজলিসে ক্বিয়ামের সময় দাঁড়িয়ে সালাম পাঠ করি। আর একান্ত আজীজী,ইনকিসারী, মুহব্বত, ইখলাছের সাথে আপনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করি।
আয় আল্লাহ পাক ! এমন কোন স্থান আছে কি যেখানে মীলাদ মুবারক উনার চাইতে অধিক খায়ের বরকত নাজিল হয় ?
হে আরহামুর রাহিমীন! আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আমার এ আমল কখনো বৃথা যাবে না। বরং অবশ্যই আপনার পবিত্র দরবারে কবুল হবে এবং যে কেউ বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে ছলাত-সালাম পাঠ করবে এবং উহাকে উসিলা করে দোয়া করবে সে কখনো মাহরূম হতে পারে না। অর্থাৎ সে অবশ্যই কবুলযোগ্য !”

দলীল-
√ আখবারুল আখইয়ার ৬২৪ পৃষ্ঠা

সুবহানাল্লাহ্ !!!

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন