সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬

হাজার বছরের ওলী আল্লাহ মুজাদ্দিদে আলফেসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফের পক্ষে লিখেছেন।


আজ হিজরী সনের ২৮ ছফর। আজ থেকে ৪০৪ বছর আগে ১০৩৪ হিজরী সনে পৃথিবী বিখ্যাত ওলী আল্লাহ হযরত আহমদ ফারুক সিরহিন্দ মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বিছাল শরীফ লাভ করেন। উনি এমন পর্যায়ের ওলী আল্লাহ ছিলেন যে উনার সম্পর্কে পবিত্র হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে , যা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জামিউল জাওয়াম ও জামিউল আহাদীস কিতাবে উল্লেখ করেন,
يُبْعَثُ رَجُلٌ عَلـٰى اَحَدَ عَشَرَ مِائَةِ سَنَةٍ وَهُوَ نُوْرٌ عَظِيْمٌ اِسْـمُه اِسْـمِىْ بَيْنَ السُّلْطَانَيْنِ الْـجَابِرَيْنِ يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ بِشَفَاعَتِهٖ رِجَالٌ اُلُوْفًا.
“একাদশ হিজরীতে একজন মহান ব্যক্তিত্ব’র আবির্ভাব ঘটবে, তিনি হচ্ছেন ‘মহান নূর’। উনার নাম মুবারক হবে আমার নাম মুবারক-এ। তিনি দুই যালিম বাদশাহার মাঝে তাশরীফ নিবেন। উনার শাফায়াতে হাজার হাজার লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (জামউল জাওয়াম, জামিউদ দুরার)
يَكُوْنُ فِـىْ اُمَّتِـىْ رَجُلٌ يُقَالُ لَه صِلَةُ يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ بِشَفَاعَتِهٖ كَذَا وَكَذَا مِنَ النَّاسِ.
“আমার উম্মতের মাঝে একজন মহান ব্যক্তিত্ব’র আবির্ভাব ঘটবে। উনাকে ‘ছিলাহ’ বলা হবে। উনার মুবারক শাফায়াতে (সুপারিশে) অসংখ্য মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (জামউল জাওয়াম, জামিউদ দুরার, জামিউল আহাদীছ, যুহুদ, ইবনে সা’দ, বাইহাক্বী)
অর্থাৎ মুযাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি’র নাম ছিলো ‘আহমদ’ এবং উনার আগমণ ঘটেছে বাদশাহ আকবর ও বাদশাহ জাহাঙ্গীরের মধ্যবর্তী সময়ে। হাদীস শরীফে আছে, নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মহান আল্লাহ প্রতি হিজরী শতকের শুরুতে এমন একজন ব্যক্তিত্ব পাঠান, যিনি উম্মতের স্বার্থে পবিত্র দ্বীন ইসলামের সংস্কার সাধন করেন।” (আবু দাউদ শরীফ)
অর্থাৎ প্রতি হিজরী শতকের শুরুতে একজন করে মুজাদ্দিদ শ্রেণীর ওলী আল্লাহ’র আগমণ ঘটবে, যাদের উছিলায় আল্লাহ তায়ালা পবিত্র দ্বীন ইসলামকে হিফাজত করবেন। আর মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি ছিলেন ঐ শ্রেণীর ওলী আল্লাহগণের মধ্যে অন্যতম। উল্লেখ্য, মুযাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি’র সময় সবচেয়ে বড় ফিৎনা ছিলো বাদশাহ আকবরের তৈরীকৃত দ্বীন-ই ইলাহী নামক সর্বধর্মের মিশ্রন। এই দ্বীনে এলাহী নিশ্চিহৃ করে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আবার ইসলাম কায়েম করেন। আবার সুন্নত সমূহ জারি করেন। সুবহানাল্লাহ্।
এই বিখ্যাত ওলী তিনি পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষে লিখে গেছেন। পবিত্র মীলাদ শরীফ সম্পর্কে বিখ্যাত ওলী কাইয়্যূমে আউয়াল, আফযালুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
دیگر درباب مولود خوانی اندراج یا فتہ بود در نفس قران خواندن بصوت حسن وقصائد نعت ومنقبت خواندن چہ مضائقہ است؟ ممنوع تحریف وتغیر حروف قران است والتزام رعایت مقامات نغمہ وتبرید صوت باں طریق الحان باتصفیق منا سب انکہ در شعر نیز غیر مبارح است. اگر ہر نہجے خوانند کہ تحریفے در کلمات قران واقع نشود و در قصائد خواندن شروط مذکورہ متحقق نگردد رواں ہم بغرض صحیح تجویز نما یند چہ مانع است؟
অর্থাৎ সুমিষ্ট আওয়াজে পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠ এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে সুন্দর ক্বাছীদাবলী আবৃত্তি করতে কি বাধা আছে? নিষিদ্ধ হচ্ছে পবিত্র কুরআন শরীফের হরফ বা অক্ষর সমূহের মধ্যে পরিবর্তন বা গানের তাল বা ছন্দ অবলম্বন স্বরের উত্থান-পতন যা সাধারণ কবিতার মধ্যেও জায়িয নেই। যদি পবিত্র মীলাদ শরীফ এমনভাবে পড়া হয় যে, পবিত্র কুরআন শরীফের মধ্যে কোনরূপ পরিবর্তন আপতিত না হয় এবং পবিত্র ক্বাছীদা শরীফ আবৃত্তির মধ্যে উপরোক্ত গানের ছন্দ বা তালের অনুসরণ করা না হয়, তাহলে এরূপ পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠে কি বাধা আছে?" (দলীল- মাকতুবাতে ইমাম রব্বানী ৩য় খ- মাকতুব নং ৭২)

মুজাদ্দিদে আলফেসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মত যুগশ্রেষ্ঠ , মনোনীত শ্রেনীর ওলী আল্লাহ তিনি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষে সমর্থন করে গেছেন। সেখানে দুই পয়সার ওহাবী বিদয়াতিরা কোন সাহসে বিরোধীতা করে??

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন